
ছবি সংগৃহীত
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের পালাবদলে আসে শরৎ। শরৎ আগমনের অন্যতম প্রতীক কাশফুল আর নীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ানো শুভ্র মেঘের ভেলা।
রিমঝিম বর্ষার পরেই ভাদ্র-আশ্বিনজুড়ে শরৎ কালের রাজত্ব। শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের শুভ্রতা। প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এর আগমনী বার্তা। তবে কালের বিবর্তনে গ্রামীণ দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শরতের কাশফুল। লক্ষ্মীপুরও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেও আগের মতো আর কাশ ফুলের দেখা মেলে না।
বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন, শরৎকাল এলেই কাশগুচ্ছ জেগে ওঠে গ্রামের নদী, ঝোপ, ঝাড়, রাস্তার আনাচে-কানাচে। তখন সাদা ধবধবে কাশফুলের মন মাতানো হিল্লোল দোল দিয়ে যায় সবার মনে।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর মৎস্য হ্যাচারির পাড়ে গিয়ে দেখা মেলে কাশফুলের। প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টিকে দেখতে এবং এর সংস্পর্শ পেতে প্রায় সময়ই পর্যটকরা আসছেন এ স্থানে।
লক্ষ্মীপুর থেকে সাদা ফুলের এই চাদর দেখতে আসেন ড্যানি চৌধুরী শাকিক। তিনি বলেন, ‘মন খারাপ ছিল, তাই এখানে এলাম। কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। মন ভালো হয়ে গেছে।’
উত্তর চরবংশি গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, ‘বর্ষার এই সময়টাতে কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো মৎস্য হ্যাচারি এলাকা। দেখতে ভালোই লাগে। কাশফুল বাংলার চিরচেনা শরতের সুন্দর স্নিগ্ধ ফুল। গ্রামবাংলার অপরূপ শোভা কাশবন ছিল চেনা দৃশ্য। কিন্তু সেই কাশবন এখন আগের মতো চোখে পড়ে না।’
কাশ ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। এ উদ্ভিদটি সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ বেশ ধারালো। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি জন্মাতে দেখা যায়।
লক্ষ্মীপুরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ বলেন, ‘আগে গ্রামীণ দৃশ্যপটে কাশবন দেখা যেত। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কাশ দিয়ে গ্রামের বধূরা ঝাঁটা, ঝুড়িসহ নানান প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করে। কৃষকের ঘরের ছাউনি হিসেবেও এর ব্যবহারের জুড়ি নেই।