
গতকাল বুধবার সারিয়াকান্দির রহদহ এলাকা থেকে তোলা ছবি।
উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে বগুড়ার যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বন্যা পরিস্থিতির এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাউবো সূত্র জানায়, যমুনা নদীর বিপদ সীমা ধরা হয় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। সকাল ৯ টার দিকে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয়। সে সময় নদীর পানি ১৭ দশমিক ২৪ মিটার উচ্চতায় রয়েছে।
এ ছাড়া বাঙালী নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ১৫ দশমিক ৮৫৩ মিটার। কিন্তু সকাল ৬ টা থেকে এই নদীতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে নির্ধারিত সীমার ওপরে ১৫ দশমিক ৯০ মিটার উচ্চতায়।
বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সম্পর্কে এর আগে সারিয়াকান্দি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, কামালপুর ইউনিয়নে সমস্যা বেশি। এই এলাকার প্রায় ৭ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিঁপূর্ণ। আমরা এসব এলাকা নজরদারিতে রেখেছি।
চলতি মাসের প্রথম থেকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। উজানে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এই পাহাড়ী ঢল ভাটি দিয়ে নেমে যাচ্ছে। এর আগে গত ১৭ জুন সন্ধ্যা থেকে যমুনায় পানি বিপৎসীমার ওপরে বইতে শুরু করে।
এতে সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের ১১টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল পানিতে ডুবেছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দির অন্তত ৬০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে।
বন্যা দেখা দেয়ার পর বগুড়া ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয় থেকে সহায়তার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন জি আর চাল এবং ১০ লাখ টাকার শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এসব বিষয় জানিয়ে ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, চলতি বছরের বন্যায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের ১১টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তাদের জন্য ৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত এবং ২টি রেসকিউ (উদ্ধার) বোট রাখা আছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭টি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, এবার বন্যায় কারণে বগুড়ার ৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮ উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমির ফসল। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ।