Joy Jugantor | online newspaper

পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে আরেক হত্যাচেষ্টা, এবার রুখে দাঁড়াল জনতা

ডেস্ক রিপোর্ট 

প্রকাশিত: ১২:৫২, ১৪ জুলাই ২০২৫

পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে আরেক হত্যাচেষ্টা, এবার রুখে দাঁড়াল জনতা

পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে আরেক হত্যাচেষ্টা, এবার রুখে দাঁড়াল জনতা

মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগ হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই পুরান ঢাকায় আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটতে যাচ্ছিল। তবে এবার সময়মতো এগিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা—ফলে প্রাণে বেঁচে যায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর।

রোববার (১৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে রাজধানীর ওয়ারীর হাটখোলা এলাকায় ইলিশিয়াল ভবনের পেছনের একটি গলিতে ঘটে এ ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সৈয়দ রেদোয়ান মাওলানা নামের এক কিশোরকে ঘিরে ধরে ৬–৭ জনের একটি দল মারধর শুরু করে। তারা মোটরসাইকেলের হেলমেট দিয়ে রেদোয়ানের মাথায় একের পর এক আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করতে উদ্যত হলে, আশপাশে থাকা অন্তত ৫০–৬০ জন জনতা এবং কাছেই দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট দ্রুত এগিয়ে এসে হামলাটি প্রতিহত করেন।ঘটনাস্থলেই দুই হামলাকারী—আব্দুর রহিম মাহি (১৯) ও সাব্বির হোসেন রাতুলকে (১৯) আটক করে পুলিশ। তবে হামলায় জড়িত অন্যরা পালিয়ে যায়।

ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকারিয়া খান জানান, আটক দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তারা নিজেদের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছে এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে। আহত রেদোয়ান ওয়ারীর এম দাস লেনে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে এবং সম্প্রতি এসএসসি পাস করেছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসা শেষে সে বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।তিনি আরও বলেন, ‘হামলার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, সময়মতো পুলিশ ও জনতা মিলে ঘটনা প্রতিরোধ করেছে। না হলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘হামলাকারীরা নিজেদের শিক্ষার্থী বলছে। আহত ছেলেটিও শিক্ষার্থী। তারা পূর্বপরিচিত ছিল কি না বা ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল কি না, এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক দিক হলো—এবার মানুষ নীরব থাকেনি। সবাই মিলে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’এদিকে ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, আটক দুই যুবককে ঘিরে স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। একজন বলেন, ‘তোদের মতো লোকদের কারণেই দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোদের আর ছাড় নেই।’স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘যদি সোহাগ হত্যার সময় জনতা এভাবে এগিয়ে আসত, তাহলে হয়তো সে বেঁচে থাকত। আজ যা ঘটেছে, তা সমাজের জন্য এক বড় বার্তা—ভয় নয়, প্রতিরোধই পথ।’