Joy Jugantor | online newspaper

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

অমানবিক ভোট কেন্দ্র!

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৭ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ২৩:০৩, ২৭ নভেম্বর ২০২১

অমানবিক ভোট কেন্দ্র!

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ব্রিগুয়াকড়া মক্তব ভোটকেন্দ্র।

কক্ষ একটি। এর মধ্যেই নারী পুরুষের আলাদা ভোট বুথ। ওই কক্ষেই রাখা হয়েছে ভোটের সরঞ্জামাদী। আবার সেখানেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন অবস্থা পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ব্রিগুয়াকড়া মক্তব ভোট কেন্দ্রটিতে। 

রোববার এ পরিস্থিতি দেখে সাধারণ ভোটার, প্রার্থী, এজেন্ট, নির্বাচন পরিচালনাকারীসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা প্রত্যেকে অমানবিক ভোট কেন্দ্র বলে মন্তব্য করছেন। 

সকাল সোয়া ৯ টায় দেখা মেলে চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ব্রিগুয়াখড়া মক্তব ভোট কেন্দ্রে নারী পুরুষের উপচেপড়া ভীড়। একটি মাত্র কক্ষে রয়েছে নারী পুরুষের আলাদা আলাদা ভোটের গোপন বুথ, ভোটের সরঞ্জাম সহ নির্বাচন পরিচালনাকারী সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং প্রিসাইডিং অফিসারের কার্যালয়।

প্রিসাইডিং অফিসার চাটমোহর সরকারী কলেজের প্রভাষক তারিকুল ইসলাম জানান, কিভাবে এটি কেন্দ্র করা হয়েছে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। এতো ছোট্ট একটি মাত্র কক্ষে কিভাবে সম্ভব নারী-পুরুষের ভোট নেয়া। তিনি বলেন, জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রার্থীদের এজেন্টদের একজন করে ভেতরে রাখা হয়েছে। বাকিদের বারান্দায় বেঞ্চ পেতে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এই কেন্দ্রে নারী ভোটার ৪৯৩ জন আর পুরুষ ভোটার ৪৭৫ জন।

আইন শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত স্টাইকিং ফোর্স প্রধান পাবনা সদর থানার ওসি অপারেশন মনিরুজ্জামান বলেন, আমি এই কেন্দ্রে আসার পর থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে চরম অমানবিক ভোট কেন্দ্র এটি। একটি রুমের মধ্যে কিভাবে কিভাবে ঠাসাঠাসি করে ভোট নেয়া হচ্ছে।  তিনি পরবর্তী নির্বাচনে এই কেন্দ্র পরিবর্তনের অনুরোধ জানান ইসির কাছে।

মহিলা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটার আমেমা খাতুন, জমেলা,  শায়লা, লাবনী, কামিনী, জেসমিনসহ অনেক নারী ভোটার বলেন, না আছে বড় মাঠ, না আছে জায়গা। ছোট্ট ঘরে কিভাবে ভোট নেয় এটা বুঝে আসে না।

পুরুষ ভোটার আমজাদ, রাজ্জাক, সোলেমান, ফজলু, জহুরুল, শহিদসহ বেশ কয়েকজন বলেন, বেশ কয়েকবার আমরা এই কেন্দ্রে ভোট দেই। কিন্তি এটা ভোট কেন্দ্র হতে পারেনা। তারা বলেন, এখন করোনা ভাইরাস।  অথচ সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি আপনারা দেখে যান।

বারান্দায় বসা নৌকা, আনারস, হাতপাখাসহ কয়েকজন মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট জানান, কক্ষে জায়গা নেই জন্য আমাদের বারান্দা বসতে দেয়া হয়েছে। অথচ আমরা এজেন্ট আমরা থাকবো ভেতরে।

এ বিষয়ে উপজেলা রিটার্নিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মগরেব আলী জানান, আমি নির্বাচনে দুই ইউনিয়নের দায়িত্ব পেয়েছি। কক্ষ বা ভোট কেন্দ্র নির্ধারন আমার নয়। এ বিষয়ে জানতে হলে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, নীতিমালায় আছে পুরোনো ভোট কেন্দ্রগুলো বহাল রাখতে হবে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও আশপাশে কোন স্কুল, কলেজ বা মাদরাসা না থাকায় এটি কেন্দ্র হিসেবে চলে আসছে।  আমরাও বুঝি একটি কক্ষে তিনটি বুথ। কিন্তু কিছু করার নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোববার পাবনার ঈশ্বরদী, চাটমোহর, সাঁথিয়া উপজেলার ২৬ টি ইউনিয়ন ও বেড়া পৌরসভার ভোট গ্রহণ চলছে।