দাঙ্গায় জড়ালে পায়ে গুলি করার নির্দেশ কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের
কেনিয়ায় চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দাঙ্গাকারীদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। তিনি বলেছেন, যারা সহিংসতা চালাবে, তাদের পায়ে পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুই দিনব্যাপী বিক্ষোভে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যুর পর বুধবার (৯ জুলাই) এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
প্রেসিডেন্ট রুটো বলেন, ‘যারা অন্যের সম্পত্তিতে আগুন দেয়, তারা অপরাধী। তাদের মেরে ফেলা উচিত নয়, তবে এমনভাবে গুলি করা উচিত যাতে তারা আর দাঙ্গা চালাতে না পারে। পা ভেঙে দিলে না হয় হাসপাতালে যাবে, সেখান থেকে আদালতে তোলা হবে।’এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আন্দোলন যেন সহিংস রূপ না নেয়, তা রুখতে তার সরকার কোনও ছাড় দেবে না।
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে পথে নামে চলমান জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধি, দুর্নীতি ও পুলিশের দমননীতির বিরুদ্ধে। আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে গত মাসে পুলিশি হেফাজতে এক রাজনৈতিক ব্লগারের মৃত্যুর পর। এই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভে নামেন শত শত তরুণ।সোমবার বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, লুটপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে নাইরোবি, এলডোরেটসহ বিভিন্ন শহরে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাঁদুনে গ্যাস, জলকামান এমনকি সরাসরি গুলিরও ব্যবহার করে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকোমেন এই বিক্ষোভকে ‘অরাজক অপরাধীদের অভ্যুত্থানের চেষ্টা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এরই মধ্যে দেশের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, রাজধানী নাইরোবি ও এলডোরেটে পুলিশের সঙ্গে কিছু সশস্ত্র গ্যাং সদস্যও ছিল, যারা দা ও চাবুক নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য আসেনি। পূর্বের বক্তব্যে তারা দাবি করেছিল, কোনো অপরাধী গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগসাজশ নেই।একই দিন সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট রুটো বলেন, ‘যারা সাধারণ মানুষ, পুলিশ, ব্যবসায়ী এবং দেশের নিরাপত্তা কাঠামোকে আক্রমণ করে, তারা সন্ত্রাসী। এমন অপরাধ দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি পশ্চাৎপদ গোষ্ঠী শর্টকাটে ক্ষমতায় যেতে চাইছে। কিন্তু আমরা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না।’প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে দরিদ্রবান্ধব নেতা হিসেবে ক্ষমতায় আসা রুটো নির্বাচনী প্রচারণায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অবসান ও মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে তিনি কঠোর মনোভাব গ্রহণ করছেন, যা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।