মদের বোতলে পানি পান জায়েজ না গুনাহ?
ইসলামের প্রথম যুগে মদ হারাম হওয়ার পরপর মদের পাত্রে পানি বা অন্য কোনো হালাল পানীয় পান করাও নিষিদ্ধ ছিল। কারণ তখন যেহেতু অনেক মুসলমানেরই দীর্ঘদিনের মদপানের অভ্যাস ছিল, আসক্তি ছিল, তাই মদপানের কথা মনে পড়ে, নেশা চড়ে যায়, এরকম যে কোনো কাজই নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা ছিল।পরে যখন মদ হারাম হওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, মদ খাওয়ার অভ্যাস ও আসক্তি চলে যায়, তখন মদের পাত্র ব্যবহারের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা রহিত করে মদের পাত্র ভালোভাবে ধুয়ে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়।
ইবনে বুরায়দা তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
نَهَيْتُكُمْ عَنِ الظُّرُوفِ وَإِنَّ الظُّرُوفَ – أَوْ ظَرْفًا – لاَ يُحِلُّ شَيْئًا وَلاَ يُحَرِّمُهُ وَكُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ
আমি তোমাদের কিছু পাত্র ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলাম। মূলত পাত্র কোন কিছুকে হালালও করে না, আবার কোন কিছুকে হারামও করে না। তবে প্রতিটি মাদকদ্রব্য হারাম। (সহিহ মুসলিম: ৫৩২৬)
মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা ও লটারির তীর তো কেবল ঘৃণার বস্তু, শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা সেগুলো বর্জন করো— যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (সুরা মায়েদা: ৯০)
এ বিষয়ে ইসলামি ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, বোতলটি প্রথমে হারাম কাজে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে তা ব্যবহার না করাই উত্তম এবং এমন বোতল এড়িয়ে চলাই উচিত। কারণ, এমন বোতল অনেক সময় হারাম কাজের দিকে আগ্রহ তৈরি করে এবং মানুষের মনে কুমন্ত্রণা তৈরিতে সহায়ক হতে পারে। তাই যথাসম্ভব মদের বোতলে পানি না রাখার চেষ্টা করা উচিত। আলেমরা এমন বোতল ব্যবহার না করার প্রতিই উৎসাহিত করেন।
তবে কেউ যদি ভালোভাবে মদের বোতল পরিস্কার করে, পরিস্কারের পর এই বোতলে মদের কোনো চিহ্ন এবং গন্ধ না থাকে, তাহলে এমন পাত্র বা বোতলে পানি রাখা এবং তা থেকে পান করা যাবে।