ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক, ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বললেন ট্রাম্প
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনাটি ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হয়েছে এবং এতে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। তবে এখনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতা হয়নি।স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজ শহরের এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প পুতিনকে প্রথম নামে (ভ্লাদিমির) সম্বোধন করে বলেন, ‘আজ আমরা সত্যিই অনেক দূর এগিয়েছি। আমার সবসময়ই প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক ছিল, ভ্লাদিমিরের সঙ্গে।’
তিনি জানান, বেশির ভাগ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, কিছু অমীমাংসিত বিষয় তেমন গুরুতর নয়, তবে একটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ— যা এখনো সমাধান হয়নি। তবে এর দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা প্রবল। আমরা এখনো চুক্তিতে পৌঁছাইনি, তবে ভালো সম্ভাবনা আছে।’এ সময় ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও পরোক্ষভাবে আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগে যে তদন্ত হয়েছিল, সেটি ছিল ‘ধোঁকাবাজি’।তিনি বলেন, ‘ওই তদন্ত আমাদের জন্য বিষয়গুলো একটু কঠিন করেছিল। কিন্তু ভ্লাদিমির বুঝতে পেরেছিল এটা একধরনের প্রতারণা। আমিও জানতাম এটা প্রতারণা। তবে যা হয়েছে, তা ছিল খুবই অন্যায়।’
ট্রাম্প বলেন, এখনো চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হয়নি। ‘চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি নেই। আমি ন্যাটো এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ফোন করব এবং আজকের বৈঠকের বিষয় জানাব। শেষ পর্যন্ত তাদেরও এ বিষয়ে একমত হতে হবে,’ বলেন তিনি।পুতিন বৈঠককে ‘আগেই হওয়া উচিত ছিল’ আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক শীতল যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছিল, যা উভয় দেশ ও বিশ্বের জন্য ক্ষতিকর। তিনি বলেন, ‘একসময় আমাদের সংঘাত এড়িয়ে আলোচনায় ফিরতেই হতো। রাষ্ট্রপ্রধানদের সরাসরি বৈঠক অনেক দিন ধরেই প্রয়োজন ছিল।’ তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তার খুবই ‘সরাসরি ও খোলামেলা’ যোগাযোগ রয়েছে এবং বৈঠকে ইউক্রেন পরিস্থিতিই মূল আলোচ্য ছিল।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে দীর্ঘস্থায়ী সমঝোতার জন্য যুদ্ধের সব ‘প্রধান কারণ’ দূর করতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কিয়েভ ও ইউরোপের রাজধানীগুলো এই অগ্রগতিকে গঠনমূলকভাবে দেখবে এবং ‘কোনো প্ররোচনা বা গোপন তৎপরতা দিয়ে অগ্রগতি ব্যাহত করার চেষ্টা করবে না।’বৈঠকের শেষে ট্রাম্প পুতিনকে ধন্যবাদ জানালে পুতিন ইংরেজিতে হেসে বলেন, ‘পরের বৈঠক মস্কোতে।’ তবে ট্রাম্প কিছুটা সতর্ক সুরে জবাব দেন, ‘মজার প্রস্তাব, তবে এতে কিছুটা সমালোচনার মুখে পড়তে পারি।’