
নবান্ন উপলক্ষে প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির একটি নবান্ন উৎসব। এ উপলক্ষে বগুড়ায় দুই দিনব্যাপী আয়োজন করেছে শিশু নাট্যদল। আয়োজনে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ছবি আঁকা, কবিতা আবৃত্তি, খেলা ও গ্রামীণ নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর প্রদর্শণী করা হয়।
গত শনিবার শহরের পৌরপার্কের রোমেনা আফাজ মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে এ আয়োজনের এক সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রতিযোগী শিশু-কিশোরদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করে আয়োজকরা।
এর আগের দিন শুক্রবার থেকে ৮ম বারের মতো এ নবান্ন উৎসব পালন করে বগুড়া শিশু নাট্যদল। উৎসবের দ্বিতীয় দিনের সকালে শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। বিকেলে ছেলেদের মোরগ লড়াই ও কাবাডি খেলা এবং কুঁড়ি’র শিশু-কিশোরদের কবিতাপাঠ। সন্ধ্যায় ক্রিয়েটিভ কালচারাল একাডেমি ও বগুড়া শিশু নাট্যদলের শিশুরা নৃত্য পরিবেশন করে এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী নজরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর মাহমুদ।
উৎসব প্রাঙ্গণ খড়, পাটকাঠি, বাঁশ, বেড়া ইত্যাদি দিয়ে গ্রামীণ আবহে সাজানো হয় এবং কৃষিভিত্তিক গ্রামবাংলার নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী- লাঙ্গল, জোয়াল, ঢেঁকি, পেলাজাল, খলই, টোপা, খরপা, মই, কাড়াল, মটকা প্রভৃতি প্রদর্শন করা হয়। উৎসবে আগত শিশু-কিশোর, অভিভাবকসহ আপামর জনসাধারণ সারাদিন ঘুরে ঘুরে দেখেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা জি এম সাকলায়েন বিটুল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল মমিন খান।
এ সময় তিনি বলেন, নবান্ন উৎসব আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। হেমন্ত ঋতুতে কৃষকেরা ধান কেটে ঘরে তোলে, নতুন ধানে কৃষকের মুখে ফুটে ওঠে। ফসলের মাঠ আর নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে চতুর্দিক ভরে ওঠে। কৃষাণিরা ধান ভানে, নতুন চালের ভাত, মাছ আর পিঠা, পায়েসে নবান্ন উৎসবে মুখরিত হয় বাংলার প্রতি ঘর।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে এই নবান্ন উৎসব আমরা ভুলতে বসেছি। আর এজন্য শহরের স্কুল-কলেজ ও বিনোদন পার্কে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এই উৎসব আমাদের শিশু-কিশোরদের বাঙালি সংস্কৃতির নবান্ন এবং কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের সাথে পরিচিতি ঘটাতে সহায়ক হবে। এ জাতীয় উৎসবের সাথে শিশু-কিশোরদের বেশি বেশি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নজরুল পরিষদের সভাপতি এড. মনতেজার রহমান মন্টু। পরে উৎসবে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার ও অন্যান্য সকল অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেয়া হয়।
পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল মমিন খান প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন ।