Joy Jugantor | online newspaper

তীব্র গরমে বগুড়ার শিবগঞ্জে তাল শাঁস বিক্রির ধুম!

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ১০ জুন ২০২১

আপডেট: ১৪:৫৭, ১১ জুন ২০২১

তীব্র গরমে বগুড়ার শিবগঞ্জে তাল শাঁস বিক্রির ধুম!

বগুড়ার শিবগঞ্জের থানা বাজারের তাল শাঁস বিক্রেতা শরিফুলের দোকান থেকে তোলা।

গ্রীষ্মের খরতাপ বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের (তালখুর)। আবাল-বৃদ্ধ সব ধরনের মানুষের এই তালখুর খাওয়ার ধুম পড়েছে। ফলে উপজেলার বিক্রেতারা দিনভর শাঁস কেটে বিক্রি করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

মধুমাসে ভিন্নধর্মী তালের শাঁস বরাবরই সকল ক্রেতাদের নজর কাড়ে। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় এটি তালখুর নামে অধিক পরিচিত। 

তালের এই রসালো মিষ্টি স্বাদযুক্ত শাঁস পুষ্টি গুণাগুণে ভরপুর। চিকিৎসকদের তথ্যমতে, আখের গুড়ের চেয়ে তালের গুড়ে প্রোটিন, ফ্যাট ও মিনারেলসের উপস্থিতি বেশি। প্রতি ১০০ গ্রামের একটি তালের শাঁসে ৯২ দশমিক ৩ শতাংশই থাকে জলীয় অংশ, ক্যালরি থাকে ২৯, শর্করা ৬ দশমিক ৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ শূন্য দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম।

বৃহস্পতিবার শিবগঞ্জ উপজেলার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মোকামতলা, কিচক, বুড়িগঞ্জ, গাংনগর, পিবর, কালিতলা, রহবল, বড়ইহাটসহ প্রতিটি হাট-বাজার ও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে তালের পসরা সাজিয়ে বসেছে মৌসুমী বিক্রেতারা। সেখানে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

তালের শাঁস বিক্রেতারা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ক তাল পাইকারী কিনে এনে বিক্রয় করেছেন। 

কথা হয় শিবগঞ্জ থানা বাজারের তাল শাঁস বিক্রেতা শরিফুলের সাথে। সে বলে, উপজেলা সংসারদিঘী নামক স্থানে হাজার খানেক তালগাছ আছে। ঐ স্থান থেকে প্রতিটি তাল গাছ  ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কিনে আনি। প্রতিটি তাল গাছে ছোট বড় মিলে, ২২০টি থেকে ২৫০টি তাল থাকে।

তাল শাঁস বিক্রেতা জামাল উদ্দিন জানান, প্রতিদিন খুব ভালোই বিক্রি হয় তাল শাঁস। ছোট ৫ টাকা এবং বড় ১০ টাকা করে। দিনে গড়ে ২৫০টি থেকে ৩০০টি বিক্রি করি। এতে প্রতি তালে লাভ হয় ২ থেকে ৩ টাকা। 

তালের শাঁস কেনার সময় কথা হয় উপজেলার অর্জুনপুর গ্রামের রেশমি বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরমের এই সময়টায় আমার পরিবারের সবাই তাল শাঁস প্রচুর খাই।  এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। 

আরেক ক্রেতা হালিম প্রামানিক জানান, এটি মৌসুমী ব্যবসা। এপ্রিলের শেষ থেকে শুরু করে আগষ্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে এ ব্যবসা। 

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাঃ শামীম বলেন, তালের শাঁস অতি পুষ্টিকর ও ঔষধিগুন সমৃদ্ধ। বয়স্কদের জন্য এ ফলের উৎস থেকে সহজেই হজমযোগ্য পর্যাপ্ত আঁশ প্রাপ্তিতে গুরুত্ব বহন করে। 

বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কাজল বলেন, মৌসুমি ফলগুলোতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। ফলে ফলগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু তাল শাঁসে কোনে প্রকার রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করা হয় না। তাই তাল শাঁস যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনি মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।