আহত খাজা মাহফুজুল হক।
বগুড়া শহরে বসতবাড়ির জায়গার কলহের জেরে খাজা মাহফুজুল হক নামে এক প্রবাসীকে মারধর করে গুরুতর জখমের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে মো. আলআমিন রাসেল নামে এক আইনজীবীও আহত হন।
অভিযোগ উঠেছে আব্দুস সালাম মানিক নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে গত ৫ এপ্রিল জুম্মার নামাজের পর শহরের কোর্টহাউজ স্ট্রিট খাজা পাড়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সঙ্গে মিজানুর রহমান নামে এক তহশিলদারও জড়িত রয়েছেন। হামলার পর আহতদের বগুড়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়।
পরে গত ১৩ এপ্রিল ৬ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেন খাজা মাহফুজুল হক। অভিযুক্তরা হলেন, আব্দুস সালাম মানিক (৫৫), তার মুবতাসিম ইহতিশাম (১৯), মিজানুর রহমান (৪৫), আব্দুস সালাম (৪৩), তানজিম প্রোমা (২৩) ও শামিম আরা নীপা (৪৪)। এ ঘটনায় আরও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, খাজা মাহফুজুল হক আমেরিকান প্রবাসী। কোর্টহাউজ স্ট্রিটে তার পাঁচ তলাবিশিষ্ট বসতবাড়ি রয়েছে। মাহফুজুল হক প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার ছেলেকে ভুল বুঝায়ে আব্দুস সালাম মানিক, মিজানুর রহমান ও তানজিম প্রোমা অনেক কম দামে এই ভবনের দুই ও তিন তলার ফ্লাট ক্রয় করেন। এরপর থেকে তারা সেখানেই বসবাস করে আসছেন।
মামলার বাদীর অভিযোগ, বসবাসের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্তরা সম্পত্তির স্বত্ত্ব বেদখলের পায়তারা করছেন। এরই জের ধরে ৫ এপ্রিল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মাহফুজুল বাসায় ফেরার সময় দেখতে পান অভিযুক্তরা মূল দরজার সামনে ভাঙ্গা কাঁচ, টাইলসের টুকরো দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। সে সময় তিনি ওসব সরাতে গেলে অভিযুক্তরা তাকে কটুকথা বলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা মাহফুজুলের ওপর কোদাল, কাঠের লাঠি দিয়ে হামলা করেন। মারধরে মাহফুজুলের বাম পায়ের উরুতে জখম হয়। ডান পাজরের গুরুতর আঘাত লাগে।
এ সময় তার চিৎকারে আইনজীবী আলআমিন, মানিকসহ কয়েক এগিয়ে এলে তাদের ওপরেও হামলা করা হয়। এতে আলআমিন রাসেলের বাম চোখের নিচে জখম হয়।
মামলার বাদী মাহফুজুল হক বলেন, ওরা প্রথম থেকেই আমার পুরো সম্পত্তি বেদখল করার পায়তারা করে আসছে। ওদের মারধরে আমার পাজরের হাড়ে ফ্রাকচার (ফেটে) হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম মানিককে ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। এজাহারের তিন নম্বর আসামি বগুড়া সদরের রাজাপুর ভূমি অফিসের তহশিলদার মিজানুর রহমানকে কল দিলে তিনিও রিসিভ করেননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক ফইম উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। এটা মামলা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আইনগত কাজ চলমান আছে।