Joy Jugantor | online newspaper

গরম আর লোডশেডিং, বগুড়ায় কদর বেড়েছে হাতপাখার

মামুনুর রশিদ মামুন

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ৭ জুলাই ২০২২

আপডেট: ০০:০২, ৮ জুলাই ২০২২

গরম আর লোডশেডিং, বগুড়ায় কদর বেড়েছে হাতপাখার

বগুড়ায় তীব্র গরম আর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিক্রি বেড়েছে হাতপাখার। শহরের কাঁঠালতলা থেকে তোলা।

বগুড়ায় তীব্র গরম আর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি আর বিদ্যুতের লোডশেডিং মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দিনে-রাতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মানুষ হাফিয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে বিদ্যুৎ এর এমন লুকোচুরিতে বগুড়াসহ অন্যান্য উপজেলাবাসী অতিষ্ঠ।

প্রচন্ড গরম আর অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সাধারণ মানুষ একটু শান্তির পরশ নিতে খুঁজছেন প্রকৃতির ছায়া। তাতেও শান্তি নেই। অবিরাম গা থেকে ঝরছে ধাম। এমনি গরমে শরীরে কখনও ধাম শুকাচ্ছে আবার কখনও ঝড়ছে।

একদিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং অন্য দিকে প্রচন্ড গরম। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মানুষ এখন ভরসা করছেন তালপাতার পাখার উপর। গরমের হাত থেকে বাঁচতে পাখা কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বগুড়াবাসী। এমন গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হাতপাখারও চাহিদা। মধ্যবিত্তের কাছে এটাই যেন এখন স্বর্গসুখ।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু শহর বা উপজেলা সদরেই নয়, বিভিন্ন ইউনিয়নে তালপাখার দোকানগুলোতে এখন উপচে পড়া ভিড়। বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের রঙ বেরঙের হাত পাখা। এমন অবস্থায় এখন সর্বত্র কদর বেড়েছে হাতপাখার।

চাহিদা বাড়ায় পাখার দামও বেড়েছে। বছরের এ সময়ে পাখার চাহিদা থাকে। চৈত্র থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত বিক্রির মৌসুম হলেও চৈত্র ও বৈশাখেই পাখা বিক্রির উপযুক্ত সময়। কিন্তু এবার ভাদ্র মাসে অতিরিক্ত ভ্যাপসা গরম হওয়ায় চাহিদা বাড়ছে তালপাখার।

বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা ও চুরিপট্টি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাত পাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু শহরেই নয়, বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাল পাখা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

শহরের কাঁঠালতলা পাখা বিক্রেতা ইউনুস আলী জানান, প্রচন্ড গরম আর বিদ্যুৎ লোডশেডিং এ হাত পাখা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় লাভ কম হচ্ছে। পাখা তৈরি করতে রং, সুতা, বাঁশ,কঞ্চি গুনার প্রয়োজন হয়। এসবের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাত পাখা তৈরিতে লাভ কম হচ্ছে। এখানে তালপাখা, কাপড়ের তৈরি পাখা ও সুতার তৈরি পাখাও পাওয়া যায়।

দাম জানতে চাইলে ইউনুস বলেন, আমার কাছে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত তালপাতার পাখা রয়েছে। সব দামের পাখাই আমি বিক্রি করি।

পাখা বিক্রেতা ইউনুস আলী আরোও জানান, তালপাতার পাখার প্রচলন বহু আগে থেকেই। তবে আধুনিক যুগে এসে হাতপাখার প্রচলন কিছুটা কমেছে। তবুও প্রচলন রয়েই গেছে। তবে বগুড়াতে গত কয়েক দিনে হঠাৎ বিদ্যুতের লোডশেডিং ও তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষ এখন হাতপাখা বেশি ব্যবহার করছেন।

দোকানে পাখা কিনতে আসা আলমগীর জানান, প্রচন্ড গরম আর রাতে-দিনে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার লুকোচুরি। তাই গরমের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির জন্য তিনটি তালপাখা কিনলাম। বিদ্যুৎ চলে গেলে কিছুটা হলেও গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।