Joy Jugantor | online newspaper

নওগাঁয় গণহত্যা দিবস পালন

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২২ এপ্রিল ২০২২

নওগাঁয় গণহত্যা দিবস পালন

বোয়ালিয়া ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের বধ্যভূমি স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

নওগাঁ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দোগাছি বধ্যভূমি স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের বধ্যভূমি স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ। একই সঙ্গে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় নীরবতা পালন করা হয়। 

পরে সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন লিটন ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এমএম রাসেলসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এসময় শহীদ পরিবার সদস্যবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শী এবং একুশে পরিষদ এর কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, নওগাঁ জেলার গণহত্যার পরিপূর্ণ ইতিহাস লিপিবদ্ধ নেই। একুশে পরিষদ নওগাঁ দীর্ঘদিন থেকে গণহত্যার ইতিহাস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন কিছু তথ্য লিপিবদ্ধ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ টির মতো গণহত্যার তথ্য সংগ্রহ করেছে। 

১৯৭১ সালের ২২ ও ২৩ এপ্রিল পাকিস্থানি সেনারা নওগাঁ শহরে প্রবেশ করে তাজ সিনেমা হল সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, ব্রীজের ওপরে আকুলা পাগলা, ব্রীজের মোড় ক্ষেত লাল সাহা, হাট-নওগাঁ, পার-নওগাঁ, আরজী- নওগাঁ, খাস-নওগাঁ সহ অসংখ্যা স্থানে শত শত মানুষকে হত্যা করে। 

১৯৭১ সালে ২২ এপ্রিল সকালে পাকবাহিনী ট্রেনে রানীনগরের কাছাকাছি চকের ব্রিজের নিকট পৌঁছে ষ্টেশনের দিকে শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। আগের রাতে নওগাঁ থেকে আনসার ও মুজাহিদদের একটি বাহিনী রানীনগর গিয়ে শেষ রাতের দিকে চকের ব্রিজ নষ্ট করে এসেছিল । ব্রিজ ভাঙ্গা দেখে সৈন্যবাহী ট্রেনটি সেখানে থেমে যায়। একদল সৈন্য ট্রেন থেকে নেমে সন্নিহিত টকবলরাম, বেলবাড়ি, দাউদপুর প্রভৃতি গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সামনে পেয়ে কয়েক ব্যক্তিকে হত্যা করে। তারপর ব্রিজ মেরামত করে সকাল ৯টার দিকে চকের ব্রিজ পেরিয়ে সান্তাহারের দিকে অগ্রসর হয়। পথে রানীনগর ষ্টেশনের পূর্বে ধারের পুকুরপাড়ে বাকাপুর নিবাসী সফিউদ্দিন খলিফাকে (৪০) এবং একই গ্রামের কায়েম উদ্দিনকে (৪২) মসজিদের ধারে গুলি করে হত্যা করে। 

একটি বিশেষ ট্রেন ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সামান্য কিছু পরে সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে। সৈন্যরা সান্তাহারে নিহত বিহারীদের লাশের স্তুপ প্রত্যক্ষ করে। বেঁচে যাওয়া বিহারীদের সঙ্গে আলাপ করে। অতঃপর দুপুর দেড়টার দিকে শেল নিক্ষেপ করতে করতে তাদের একটি দল নওগাঁ শহরের দিকে অগ্রসর হয়। অপর দলটি সান্তাহারে অবস্থান নেয়। 

পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল নওগাঁ শহরের পাশের গ্রাম ধামকুড়িতে প্রবেশ করেই একই পারিবারের ৮ জনসহ ১২ জনকে হত্যা করে। আরও বিভিন্ন দলে বিভিক্ত হয়ে নওগাঁ শহরের বিভন্ন প্রন্তে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। এরপর হত্যাযজ্ঞের তান্ডলীলা চালিয়েছে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

একুশে পরিষদ নওগাঁ ২২ এপ্রিল কে নওগাঁ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।