
ছবিঃ পিকাসো
আপনার / আপনাদের কি মনে আছে, শেষ কবে? কখন? কোথায়? কিভাবে সঙ্গম করেছিলেন? অনেকেই হয়তো বলবেন এখনো হয়তো সে অভিজ্ঞতা হয়নি। কেউবা বলবেন এই তো দু' দিন,দু'দন্ড বা কয়েক দিন / মাস বা বছর আগে।
যখনই, যেখানে, যেভাবেই, যার সাথেই আপনার/ আপনাদের সঙ্গম সম্ভোগ হয়ে থাকুক না কেন। আপনি/ আপনারা কি তা উপভোগ করেছেন? না কি শুধুই ভোগ করেছেন?
কতজন, পুরুষ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, যে সঙ্গম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তার সঙ্গিনীর শরীরটিকে ভস্মের স্তুপ মনে হয়নি? পাশ ফিরে অফিস বা অন্য কোন চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েননি?
সঙ্গিনী কাছে এসে জড়িয়ে ধরতেই সেই হাত দুটো পাহাড়ের মতো ভারী মনে হয়নি?
কতজন নারী বলতে পারবেন, যে সঙ্গম শেষে তার পুরুষ সঙ্গীটিকে তার কাছে আরো বেশি প্রিয় মনে হচ্ছে। কতজন নারী, তার পুরুষ সঙ্গীটিকে বলে থাকেন, তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার জন্য এতো পরিশ্রম করার জন্য।নিশ্চয় তুমি পরিশ্রান্ত? তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিই? তোমার পা/ বডি মাস্যাজ করে দিই?।
অধিকাংশ উত্তরই না নাবোধক
দাম্পত্য কে যদি ৬/৭ ফিট খাটের পরিধিতেই বন্দী করে রাখেন, যদি কয়েক মিনিট বা ঘন্টার কাঁটায় তা সীমাবদ্ধ থাকে।তবে সকল দম্পতির ক্ষেত্রেই দাম্পত্য জীবন বিয়ের ৫/৬ বছর পর নেহাৎ অভ্যেস ছাড়া আর কিছু ঠেকবে না। স্বামী- স্ত্রী হয়ে যাবেন ভাই-বোন।
দাম্পত্য মানেই ফোন করে স্বামীর কানে কানে বলা নয়, হ্যাঁ গো শুনছো? আসার সময় মনে করে আলু, পটল, তেল, নুন নিয়ে এসো।
দাম্পত্য মানেই নয়, তুমি আমার বৌ, আমি যখন চাইবো তখনই তোমার শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিতে হবে, তাতে স্ত্রীলোকটির যতই শারীরিক বা মানসিক কষ্ট থাকুক।
দাম্পত্যের দায় থেকে বেরিয়ে এসে দাম্পত্যকে নিঃশ্বাস নিতে দিতে হবে। দাম্পত্য-জীবন প্রজাপতি জীবন, এই জীবনকে কাঁটার আঘাত থেকে রক্ষা করা জানতে হবে। এ জীবনকে খুব আষ্টে পিষ্টে যেমন বাঁধা যাবে না আবার একদম উদাসীন হওয়াও যাবে না। ধৈর্য, মাধুর্য, সহমর্মিতা, সমঝোতা দিয়েই গড়ে তুলতে হবে সংসার নামের অমরাবতী।
পুরুষের যেমন শারীরিক ক্ষুধা রয়েছে, নারী দেহের ও ঠিক তেমনই ক্ষুধা রয়েছে। এখন আপনারা পুরুষ হয়ে যদি সবসময় নিজের দিকটা দেখেন তাহলে তো হবে না। নারীদের দিকটাও দেখতে হবে। তাদের ক্ষুধা- তৃষ্ণা মেটানোর দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের মানে পুরুষদের। তাই বাহিরে ছোঁক ছোঁক না করে নিজের ঘরের বিড়ালটিকে দুধ খেতে দিন। নয়তো একদিন না একদিন সেও চুরি করা শুরু করবে। "এ জগতে হায়, খাইতে পারলে কে চুরি করিতে চায়?"
সারাদিন সন্তানের পিছনে সময় না দিয়ে, অফিস বা কাজ থেকে যে ব্যক্তিটি ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে, সেই মানুষটাকেও একটু সময় দিন। ছেলে মেয়ে টিফিনে কি খাবে সে ভাবনার সাথে, সেই স্বামীরূপী মেশিনটাকেও জিঙ্গেস করুন, তোমাকে কি আদা চা দিবো না লেবুর শরবত? তোমার কি খারাপ লাগছে একটু গা টিপে দিবো?
বাহিরের পরস্ত্রী, কন্যাদের আপনার বেশি ভালো লাগে।? কলেজ বা স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের সুডৌল স্তনযুগল আপনার নজর কাড়ে। ওদের দেখলেই আপনার দন্ডটি দাঁড়িয়ে যায়? বিশ্বাস করুন, একসময় আপনার সঙ্গিনীর স্তনযুগল ও হাজার পুরুষের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুন। যাদের মাংসল নিতম্বের ঢেউ আপনার ঘুম কেড়ে নিচ্ছে। সময়ের স্রোতে সে ঢেউও থেমে যাবে। এই যৌবন নদীতেও খরা জাগবেই জাগবে।
অনেকেই বলেন পুরুষ কখনো বুড়ো হয়না, আশি বছর বয়সেও পুরুষ যুবক। তাই যদি হয়, তবে আশি বছরের বুড়ো খোকারা ফুটবল কেন খেলে না, তাদের কেন বাতের ব্যথা? দাঁত পড়ে যায়। টুনা মাছের মতো সমুদ্রে সাঁতার কাটা আর দারকিনা পোনার মতো পুকুরে ঝাঁক বেঁধে হুপুস হাপুস ডুব সাঁতার কাটা এক কথা নয়।
অনেক মেহমান বাড়িতে গিয়ে দেখবেন এমন কিছু নিমন্ত্রিত অতিথি আছেন, যারা খেতে পারবে না, তবুও প্লেটভরা খাবার নিয়ে মেখে নষ্ট করবে। এই ধরনের বুড়ো-খোকারাও ঠিক তেমন মানসিকতার।
নিজের দাম্পত্য সঙ্গীকে সময় দিন
মাঝে মাঝে একটা বেলী ফুলের মালা কিংবা সকালে ফোটা জবা গুঁজে দিন না আপনার প্রেয়সীর খোঁপায়। দেখবেন সেদিন রান্নার স্বাদ বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুন।
প্রশংসা করতে শিখুন। বলুন তোমাকে কিন্তু মোটা হবার পর আরো বেশি লাবন্যময়ী মনে হয়। বাঙ্গালী নারী এমনই হওয়া চাই, একটু চর্বি না হলে কি আর হয়? দেখুন সে আগের চেয়ে দ্বিগুন আনন্দে কাজ করবে।
আপনার সংসারে ভূতের বেগার খাটা, চিনির বলদটাকে বলুন না, হ্যাঁ গো তুমি আমাদের জন্য কত পরিশ্রম করো।
স্বামীকে বলুন না, শোননা কয়েকদিন পর পর নতুন শাড়ী, গহনা আমার চাই না। এ মাসে তুমি না হয় একটা নতুন শার্ট নাও, এ আমার অনুরোধ। দেখবেন স্বামী নিজের অজান্তেই আপনার ললাটে চুমু খাচ্ছে।
অধিকাংশ পুরুষ যেমন শারীরিক দিক থেকে খুবই স্বার্থপর লোভী, অনেক নারীও তেমনি শাড়ী, গহনা করতে করতে তার ঘরের পুরুষকে ভালোবাসতেই ভুলে যায়। সংসার করতে গিয়ে যা করা হয় তার নাম বিনিময়।
মনে রাখবেন সংসার কোন বাজার নয়, এটা স্বর্গ, এটা শিল্প।এখানে উভয় পক্ষকেই নিঃস্বার্থ হতে হবে। হতে হবে উদার। তবেই সংসারে ফুটবে দাম্পত্য সুখের ফুল।
যার সুবাসে আলোকিত হবে সমাজ, সংসার।
নিজেকে সময় দিন নিজেদের সময় দিন, দাম্পত্য একটি শিল্প।।আর প্রতিটি দম্পতী সে শিল্পের শিল্পী, শিল্পী হয়ে উঠা এতো সহজ নয়। প্রয়োজন সাধনা, ধৈর্য, কৌশল ও ভালোবাসা।
ভালোবাসায় থাকুন, ভালোবাসায় রাখুন।