
জান্নাতুল নাঈমের প্রতিবাদ।
গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে ও গলায় ফেষ্টুন ঝুলিয়ে 'কলম সন্ত্রাসীরা নিপাত যাক, সাংবাদিকতা মুক্তি পাক' প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছেন গাইবান্ধার এক সাংবাদিক। এ সাংবাদিকের নাম জান্নাতুল নাঈম। তিনি 'দৈনিক লাখো কন্ঠ' পত্রিকার গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কমর্রত আছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পৌর শহরের ১ নং ট্রাফিক মোড়ে দাড়িয়ে এই প্রতিবাদ জানান জান্নাতুল।
এসময় জান্নাতুল নাঈম তার গায়ে জড়ানো কাফনের কাপড়ে সমর্থন চেয়ে স্বাক্ষর নেন সাধারণ মানুষের। স্বাক্ষরিত কাফনের কাপড়সহ আগামী রোববার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষনাও দেন তিনি।
এর আগে (২৩ নভেম্বর) বিকেলে Jannatul Naim নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তার ফেসবুকে অপসাংবাদিকতা নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
সাংবাদিকের মত দেখতে আসলে এরা সাংবাদিক না। আসলে এরা হলো কলম সন্ত্রাসী। আমি এদের নাম দিয়েছি কলম সন্ত্রাসী। আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ আছে তাদের আবার বিদ্রোহী কবি কবি ভাব কিন্তু এরা কবিও না। চাঁদার না পেলে এদের কবি কবি ভাব আসে, টাকা পেলে সব ভাব দৌড় দেয়। সাংবাদিককে যেখানে বলা হয় সমাজের বিবেক। একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যম। সাংবাদিকদের বেশভূশাক পারে টাকা দিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে অসৎ উপায়ে একটা পরিচয়পত্র নিয়ে এসে রাতারাতি হয়ে যায় কলম সন্ত্রাসী। শুরু হয় চাঁদাবাজি। আগে চাঁদাবাজি করতো গুন্ডারা। আর এখন গাইবান্ধায় চাঁদাবাজি করে কলম সন্ত্রাসীরা। সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে এই কলম সন্ত্রাসীদের কারণে। সমাজের মধ্যে তৈরী হয়েছে গোদের উপর বিষফোঁড়া।
এদের কাজ হচ্ছে সোশাল মিডিয় ভাইরাল করে দেব, এই হুমকি ধামকী দেখিয়ে মানুষের কাছে টাকা পয়সা নেয়া। এরা কখনো একা আবার কখনো সঙ্গবদ্ধ ভাবে চলাফেরা করে। সমাজের মধ্যে হেয় প্রতিপন্ন করবে, এই হুমকি ধামকী দিখিয়ে এরা মানুষ কাছ থেকে টাকা পয়সা লুট করে নিচ্ছে। বেশিভাগ কলম সন্ত্রাসীর শিক্ষাগত যোগ্যতা আন্ডার মেট্রিক পাশ। কেউ কেউ আছে ক্লাস ফোর পাশ। এদের অতীত জীবনে কেউ কেউ ছিল আলু, বাদাম, পোঠল ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে কেউ কেউ রয়েছে মাদক সেবনের সাথে জড়িত ও নারী পিপাসু ।
সেইদিন এক ঠিকাদার ছোট ভাই আমাকে বলতেছে, ভাই এই কলম সন্ত্রাসী দের উৎপাতে তো আর ব্যবসা করতে পারছি না। সারাদিন ৫০ টাকা, ১০০ টাকা করে কলম সন্ত্রাসীরা দের ফকিরের ভিক্ষা দিতে হচ্ছে। এই সব কলম সন্ত্রাসীদের পরিচয় পত্র থাকলেও, নেই কোন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পত্র। ১৩ নভেম্বর ২০২২ গাইবান্ধার বহুল প্রচলিত সাপ্তাহিক (পত্রিকা অবিরামে) "ভূয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্য বাড়ছে গাইবান্ধা, বিপাকে পেশাদাররা" । এই শিরোনামে একটি সংবাদও প্রকাশ করা হয়। এই কলম সন্ত্রাসীদের উৎপাতে পৌর শহরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা ও সরকারি, বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখন ত্যক্ত বিরক্ত। এদের থামাবে কে??? এদের লাগাম টেনে ধরবে কে??? মাঝে মাঝেই এদের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে লাগে কেচাল।
এদের রুখতে গেলে গাইবান্ধার শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। নইলে এই চাঁদাবাজি কোন ভাবে বন্ধ হবে না। সমাজের সব দুষ্ট প্রকৃতির লোকরা এদের হতে নিয়ে সমাজের ভবিষ্যত প্রজন্মের ভবিষ্যত নষ্ট করবে। এদের কারণে দেশ ও জাতির ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মূলধারার সাংবাদিকরা। জাতি সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে এদের স্বার্থ চরিতার্থ করছে। সমাজে ও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে দেশের উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে পিছিয়ে পড়েছে আমার দেশ ও জাতি।
তাই আমি একাই একটি আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। আমার আন্দোলনের স্লোগান হচ্ছে "কলম সন্ত্রাসীরা নিপাত যাক সাংবাদিকতা মুক্তি পাক"। আগামী কাল সকাল ১০ ঘটিকায় গাইবান্ধা পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র আসাদুজ্জামান মার্কেট এর সামনে একটি পথ সভা আয়োজন করেছি। দল মত নির্বিশেষ আপনাদের সবাইকে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। হোক প্রতিবাদ কলম সন্ত্রাসী দের বিরুদ্ধে। দেখা হবে রাজপথে ইনশাল্লাহ।