
ফাইল ছবি
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব পড়েছে বগুড়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে। বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় অপারেশনের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাকি রোগীদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের।
মঙ্গলবার বিকেলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে এমন পরিস্থিতি জানা গেছে। এ হাসপাতালে দুটি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রয়েছে। এতে গাইনী, সার্জারি ও অর্থোসার্জারি এই তিন বিভাগের রোগীদের অপারেশন করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুটি ওটি মিলে প্রতিদিন গড়ে ১৬ টি পর্যন্ত অপারেশন করা যায়। কিন্তু সম্প্রতি ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অপারেশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণত আগে একটি ওটিতে রুটিন বা শিডিউলের ৮ থেকে ৯টি অপারেশন হতো। এখন সেখানে সর্বোচ্চ চারটি অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে।
এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ২৫ জন রোগীদের ঈদুল আজহার পরে শিডিউল দেয়া হয়েছে।
এমন একজন শহরের নাটাইপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম। তিনি অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করার জন্য মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাকে ঈদের পরে তাকে আবার আসতে বলা হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে বেশি অপারেশন করতে পারছে না চিকিৎসকরা। তাই তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে। বলেছে ঈদের পর এসে হাসপাতালে ভর্তি হতে। আমার সমস্যা বেশি জরুরী নয়। এ জন্য আমিও বাসায় চলে এসেছি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিক আমিন কাজল বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা শুধু জরুরী অপারেশনগুলো করছি। আর অন্তত ২৫ জন রোগীকে ঈদের পর শিডিউল দিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জেনারেটর রয়েছে, কিন্তু ওটিতে এয়ারকন্ডিশন, অটো কিনজিং মেশিন এসব জেনারেটর দিয়ে বেশি ক্ষণ চালানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের রোগীদের ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।
তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীদের লোডশেডিংয়ে তেমন সমস্যা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। শহরের কলোনী এলাকার রেইনবো কমিউনিটি হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালকপক্ষদের একজন ডা. মো. সোহেল রানার সঙ্গে কথা হয়।
তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের অপারেশনের ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেনারেটর চালাতে গিয়ে আমাদের ব্যয় বাড়ছে।
নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) জেলা কার্যালয় থেকে জানা যায়, বগুড়ায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ৮২ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৪২ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সংকট কবে নাগাদ নিরসন হতে পারে তা অনিশ্চিত বলে জানান নেসকো বগুড়ার বিতরণ বিভাগ ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মুন্নাফ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সবার কষ্ট হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন এই কষ্ট কতদিন ভোগ করতে হবে। কিন্তু আসলেই আমাদের জানা নেই।
মূলত গ্যাস ও ফুয়েল সংকট থেকে এই লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এখন কবে নাগাদ সংকট কমবে তার অফিসিয়ালি ডিক্লারেশন আমরা পাইনি।
আব্দুল মুন্নাফ আরও বলেন, তবে সামনে ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে। এই সময় কারখানাগুলো বন্ধ থাকলে বিদ্যুৎ ব্যবহারের চাপ একটু কমবে।