Joy Jugantor | online newspaper

ত্বকের ক্যানসারের টিকা আশা জাগাচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ত্বকের ক্যানসারের টিকা আশা জাগাচ্ছে

প্রতিকী ছবি।

সবচেয়ে মারাত্মক ধরনের ত্বকের ক্যানসার ‘মেলানোমা’র বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’ এমআরএনএ টিকার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। ত্বকের ক্যানসারকে স্থায়ীভাবে নিরাময়ে এমআরএনএ-৪১৫৭ (ভি৯৪০) নামের এই টিকার ‘গেম চেঞ্জিং’ সম্ভাবনার প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডের হার্টফোর্ডশায়ারের বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সী স্টিভ ইয়ং এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অন্যতম। স্টিভেনেজ শহরের অধিবাসী স্টিভ ইয়ংয়ের মাথার খুলির ত্বক থেকে গত বছরের আগস্টে মেলানোমায় আক্রান্ত কোষ অপসারণ করা হয়। পরীক্ষামূলক টিকাটির লক্ষ্য- তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অবশিষ্ট ক্যানসার কোষগুলোকে চিহ্নিত করে নির্মূল করতে সাহায্য করা।

আশা করা হচ্ছে, এর ফলে তার ত্বকের ক্যানসার আর ফিরে আসবে না। এমআরএনএ-৪১৫৭ (ভি৯৪০) টিকাটি বর্তমানে প্রচলিত কিছু কোভিড টিকার মতো একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় দেখা গেছে এই টিকা মেলানোমায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে পুনরায় ক্যানসার ফিরে আসার ঝুঁকি নাটকীয়ভাবে হ্রাস করে। টিকাটির এখন তৃতীয় এবং চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা চলছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন হসপিটালসের (ইউসিএলএইচ) চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ টিকার পাশাপাশি পেমব্রোলাইজুমাব বা কিট্রুডা নামের আরেকটি ওষুধ দিচ্ছেন, যা ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সাহায্য করে।

মডার্না এবং মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোমে (এমএসডি) কোম্পানি যৌথভাবে এই টিকা তৈরি করেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশের বিশেষজ্ঞরাও এটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছেন।

টিকাটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক, যার অর্থ পৃথক রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী এটির গঠন পরিবর্তন করা হয়। টিকাটি প্রত্যেক রোগীর নিজের টিউমারের জিনগত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মেলানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। 

এই টিকাটি একটি স্বতন্ত্র নিওঅ্যান্টিজেন থেরাপি। টিকাটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটি শরীরকে ক্যানসার কোষগুলোতে পাওয়া মার্কার বা অ্যান্টিজেনকে আক্রমণ করতে সক্ষম প্রোটিন বা অ্যান্টিবডি তৈরি করার নির্দেশ দেয়।

ইউসিএলএইচের গবেষক ডা. হিদার শ’ বলেন, টিকাটি মেলানোমা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সারিয়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য ক্যানসার যেমন—ফুসফুস, মূত্রাশয় ও কিডনির টিউমারের ওপরও এটি পরীক্ষা করা হচ্ছে। ‘এটি ক্যানসারের চিকিৎসায় দীর্ঘদিনের মধ্যে দেখা সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতিগুলোর একটি’, বলেন হিদার শ’।

বিশ্বজুড়ে প্রায় ১১শ মানুষের উপর চূড়ান্ত ধাপের এই পরীক্ষা চালানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন বিজ্ঞানীরা।