
আম চাষের শুরুর দিকে গাছে গাছে বিপুল পরিমাণে মুকুল আর সবুজ কচি আমের সমারোহ দেখে বুক ভরা আশা নিয়ে ছিলেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আমচাষীরা। তারপর টানা খরা ও তীব্র তাপদাহের কবলে পড়ে ঝরতে থাকে কাঁচা আমগুলো। বোটা শুকিয়ে এবং গাছেই ফেটে অঝোড়ে ঝরে পরছে আম। ছোট পরিসরের আম বাগানের মালিকরা হা হুতাশ করছেন। কৃষি বিভাগের কোন সহযোগীতা কিংবা পরামর্শও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত আমচাষীদের।
উপজেলার ধরঞ্জী, আয়মারসুলপুর, বাগজানা, বালিঘাটা ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের আমের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে প্রচুর আম ধরলেও তা প্রচন্ড খরা ও দাবদাহে আমের গুটি গুলো ফেটে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। অনেকেই নিজের বাগানের আমের গুটি গুলোকে রক্ষা করতে গাছের গোড়ায় পানি আবার অনেকেই গাছে কীটনাশক স্প্রে করছে ।
উপজেলার বালিঘটা ইউনিয়নের পাটাবুকা গ্রামের আমচাষী মিজানুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর শুরুর দিকে আমের মুকুল ও গুটি ভালই হয়েছিল । কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমের গুটিগুলো ঝরে পড়ে যায়। বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও তা রক্ষা করা যাচ্ছে না । তবে খরচের তুলনায় আম বিক্রি করে খুব একটা লাভবান হওয়া যাবে এবার ।
শ্রীমন্তপুর গ্রামের আমচাষি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার আমের বাগানটি মৌসুমের মধ্যম সময়েই পাইকারদের নিকট বিক্রি করে দিতাম । কিন্তুু এবার আবহাওয়া ভাল না থাকার কারণে পাইকার পাওয়া যাচ্ছে না । তারপরও যে সব পাইকার বাগান কিনতে চাচ্ছে তাতে লাভবান হওয়ার চেয়ে ক্ষতি সম্মূখীন হচ্ছি।
উপজেলার কাঁচনা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, বাড়ী আশে পাশে আমার বেশকিছু আমের গাছ আছে । সেই গাছের আম বাড়ীতে খাওয়া হতো । কিন্তুু এবার রোদ আর আকাশের পানি হওয়ার কারনে ঝরে পড়ে গেছে । তাই বাজার থেকে কিনে খাওয়া ছাড়া উপায় নাই ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, এবার উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ করা হয়েছে । পাশাপাশি আরো আম গাছ রয়েছে । এবার আমের ফলন ভাল হলেও তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে আমের গুটিগুলো ঝরে যাচ্ছে । কৃষি বিভাগ থেকে আম চাষীদের গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়ার পরামর্শ হচ্ছে বলেও তিনি জানান ।