পাকাধান কাটার নির্দেশনায় তীব্র তাপদাহের মধ্যেও সারিয়াকান্দিতে ৭`শ হেক্টর বোরোধান কর্তন
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পাকাধান কর্তনের নির্দেশনা পেয়ে তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে ৭'শ হেক্টর জমির বোরোধান কর্তন সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামীদিনে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার শঙ্কাতেও রোদে পুরে আধাপাকা বোরোধান কর্তন করছেন কৃষক কৃষাণি । বাজারে আগাম ধান বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে কৃষকদের । দ্রুত পাকাধান কেটে ঘরে তোলার নির্দেশনা রয়েছে কৃষি অফিসের।
সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার সারিয়াকান্দিতেও তীব্র তাপদাহ চলমান রয়েছে।এ উপজেলায় তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেই কৃষকরা বোরোধান কর্তন শুরু করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় , আগাম জাতের বোরোধানগুলো কৃষকরা কর্তন করছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ববেং অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে কৃষকরা মনে করছেন এ তীব্র দাবদাহের পর শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ আশঙ্কায় তারা জমি থেকে বোরোধান কেটে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর রহমান বলেন, আগাম জাতের বোরোধান রোপণ করেছিলাম ৫ বিঘা জমিতে। যেরকম তাবদাহ দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে এবার শিলাবৃষ্টি হবে। তাই তড়িঘড়ি নীচু এলাকার ২ বিঘা জমির ধান ইতিমধ্যেই কর্তন করেছি।
উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চাতাল ব্যবসায়ি মামুন মিয়া বলেন, উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে নতুন বোরোধান উঠা শুরু হয়েছে। নতুন বোরোধান কাঁচা ১ হাজার টাকা থেকে ১১০০ টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরোধানের আবাদ হয়েছে। ফলন হয়েছিল চালে ৫৬ হাজার ৩০৮ মেট্রিক টন। এ বছর বোরোধান চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ১৪ হাজার ৪১০ হেক্টর। এ পর্যন্ত ৭০০ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ব্রি ধান-২৮, ২৯, ৫৮, ৭৪, ৮১, ৮৮, ৮৯, ৯২, ১০০, ১০১, ১০২,সুলভ, কাটারি , লতা প্রভৃতি উফশী জাতের বোরোধানের আবাদ হয়েছে। এছাড়া ১২০৩, ১২০৫, এস এল-৮ এইচ, এসি আই, হিরা-২, তেজগোল্ড, হিরা-৬, পারটেক্স-৬, থ্রি এস, ছক্কা, এস এল-৩ এইচ, উইং-৩০২ প্রভৃতি হাইব্রিড জাতের বোরোধানের আবাদ হয়েছে। এছাড়া চরাঞ্চলের স্থানীয় জাতের বোরোধান কর্তন প্রায় শেষের দিকে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, সামনের অনিশ্চিত আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে ক্যাবিনেট থেকে কৃষকদের প্রতি দ্রæত পাকা ধান কেটে সংগ্রহ করার নির্দেশনা এসেছে। যেহেতু সামনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে তাই কখন কি হবে তা কিছু বলা যাচ্ছে না।তাই কৃষকদের শতকরা ৮০ ভাগ পাকাধান কর্তন করে নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া তীব্র রোদে পুরে কাজ না করে সকালের দিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ায় মাঠে কাজ করতে হবে। কাজের পাশাপাশি অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হবে এবং তরল জাতীয় পানীয় পান করতে হবে।