Joy Jugantor | online newspaper

বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছুরিকাহত যুবদল নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:০১, ২০ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ০৫:১৬, ২০ আগস্ট ২০২২

বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছুরিকাহত যুবদল নেতা

আহত যুবদল নেতা মিল্টনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্য চলাকালে ধাক্কা দেয়া নিয়ে এই হট্টগোলে যুবদলের এক নেতাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আরও এক নেতা মারধরের শিকার হন।

হামলার পরপরই এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা নিজেদের মাঝে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।  

শুক্রবার বিকেল সোয়া ৬টা দিকে শহরের নবাববাড়ী রোডের জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

ছুরিকাঘাতে আহত নেতার নাম মেফতা আল রশিদ মিল্টন। তিনি শহর যুবদলের সদস্য এবং কাটনারপাড়ার বাসিন্দা। অপর আহত নেতা শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম। 

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বিকেলে দলীয় কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়। বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি র‌্যালি করে তারা। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় সমাপনী বক্তব্য শুরু করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল। তার বক্তব্য চলাকালে সভা থেকে হট্টগোল শুরু হয়। এর মধ্যে মিল্টন ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে পাশের ডায়াবেটিক হাসপাতালে নিয়ে যায় অন্য নেতা-কর্মীরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় মিল্টনকে।

এ ঘটনায় আহত রবিউল ইসলাম রতন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সভা থেকে কেউ একজন তাকে কথা সংক্ষেপ করতে বলেন। ওই সময় তাকে ধাক্কা দেয়া হয়েছে বলে জুয়েল প্রতিবাদ করে ওঠেন। এই নিয়েই শুরু। 

রবিউল ইসলাম আরও বলেন, এক পর্যায়ে সেখানে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে মারধর হলে আমরা এগিয়ে যাই। এ সময় যুবদল নেতা মিল্টনের পায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারীরা। আমিও দু পক্ষের হট্টগোল থামাতে গেলে হালকা আঘাতের শিকার হই। শরীরের কয়েক জায়গায় ফুলে উঠেছে। 

মেফতা আল রশিদ মিল্টন বলেন, ওখানে জুয়েল ভাই ছিল। তার সমর্থিত কিছু ছেলে যুবদলের এক কর্মীকে মারধর করছিলেন। আমি তাদের বাঁধা দিই। কিন্তু তারা আমাকে ছুরিকাঘাত করে। আমি তাদের সবাইকে চিনেছি। কিন্তু নাম বলব না এখন। 

জানতে চাইলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমি অসুস্থ অবস্থায় অনুষ্ঠানে যোগদান করি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলাম। তখন কোনো কারণ ছাড়াই যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার মুকুল আমার পাঁজরে কনুই দিয়ে গুতো দেন। এ ঘটনায় আমি অবাক হয়ে যাই। জানতে চাইলাম তিনি কেন এমন করলেন? এরপর হট্টগোল হলে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। 
ছুরিকাঘাতের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আহ্বায়ক বলেন, আমি তো এমন কিছু জানি না। ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর এ রকম কিছু হতে পারে।

তবে তার এমন অভিযোগ এক কথায় নাকচ করে দেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার মুকুল। তিনি বলেন, এ ঝামেলা আহ্বায়কের পূর্ব পরিকল্পিত। দীর্ঘদিন ধরেই দলে এই ঝামেলা হচ্ছে। আজকে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্নাঢ্য র্যা লি হয়েছে। আনন্দের দিন। এমন দিনেই আহ্বায়ক তার ছেলে-পেলে অস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে কেন আসবে। 

ধাক্কা দেয়ার প্রসঙ্গে সরকার মুকুলের ভাষ্য, এমন অভিযোগ পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক। তিনি অতীতেও এ ধরনের কার্যক্রম করেছেন। জেলা আহ্বায়ক দলের ক্ষতির জন্য এসব করছেন। আজকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যুবদলের এক ভাই ছুরিকাহত হলো। এ ঘটনায় দলের উর্দ্ধতন নেতাদের জানানো হয়েছে। আমরা এর সুবিচার চাই। 

সার্বিক বিষয়ে সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুষ্ঠানে হামলায় একজন ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে ওই সময় সেখানে কেউ ছিল না। হামলায় জড়িতদের খোঁজখবর চলছে।