Joy Jugantor | online newspaper

পুলিশ আমাকে গ্রেফতারের বেআইনি চেষ্টা করছে: ইমরান খান

ডেস্ক রির্পোট

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ১৫ মার্চ ২০২৩

পুলিশ আমাকে গ্রেফতারের বেআইনি চেষ্টা করছে: ইমরান খান

পিটিআই কর্মী ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষ

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে পিটিআইয়ের কর্মী ও তার সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবারের (১৪ মার্চ) এ সংঘর্ষে ডিআইজিসহ ৩০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একইসঙ্গে আহত হয়েছেন ইমরানের সমর্থকরাও। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলে জামান পার্কে ইমরানের বাড়ির সামনে আসে পুলিশ। পুলিশ যাওয়ার পর কর্মী-সমর্থকেরা পথ অবরোধ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ ইমরান খানকে গ্রেফতারের জন্য বাড়ির ভেতর যেতে চাইলে তার কর্মী-সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও পাটকেল ছুড়তে থাকে। প্রায় ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পিটিআই কর্মী ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষ চলতে থাকে। 

পুলিশ ইমরানের সমর্থকদের লাঠিপেটা শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। মধ্য রাতের সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ৩০ সদস্য আহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ইমরানের সমর্থকরাও।

জিও নিউজের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, অন্তত ১৫ জন পিটিআই কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

পাঞ্জাব পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার বলেছেন, পুলিশ দলকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য যারা পিটিআই কর্মীদের উস্কানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযোগ আনা হবে। পুলিশ আদালতের নির্দেশ পালন করছে। কিন্তু যারা তাদের কর্মীসমর্থকদের পুলিশ দলের উপর হামলা করতে উস্কানি দিচ্ছে তারা অপরাধের মাত্রা বুঝতে পারবে। উস্কানিদাতাদের অনুসন্ধাতে পুলিশ কাজ করছে।

এদিকে প্রাদেশিক রাজধানীর নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে মধ্যরাতে জরুরি বৈঠকে বসেন পাঞ্জাবের অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে পিটিআই প্রধানকে আটক করা এবং সকালের আগে অভিযান শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশ এবং রেঞ্জার্সের নতুন ইউনিট বুধবার (১৫ মার্চ) ভোরে 'দ্য মলে' অবস্থান নেয়। অল্প সময়ের মাঝে রেসকিউ ১১২২ গাড়িসহ বেশ কয়েকটি পিজন ভ্যান এসে পৌঁছায়।

গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় পিটিআই নেতা আসাদ উমর বলেছেন, লাহোর হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশ্বাস দিয়েছেন ইমরান খান আগামী ১৮ তারিখ আদালতে হাজির হবেন। তিনি আরও বলেন, পুলিশের এই অভিযান অযৌক্তিক।

প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পাওয়া উপহার রাষ্ট্রীয় তোষাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগে সোমবার (১৩ মার্চ) ইসলামাবাদের একটি দায়রা আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। আদালতের নির্দেশের পর এদিনই ইসলামবাদ পুলিশের একটি দল ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে লাহোরে এসে পৌঁছায়।

বাড়িতে অবস্থান করলেও সংঘর্ষের জেরে ইমরানকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর কর্মী–সমর্থকদের বার্তা দিয়ে টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেন ইমরান খান। ভিডিও বার্তায় তিনি তার কর্মী–সমর্থকদের রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। ইমরানের আহ্বানের পর ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি ও পেশোয়ারে ইমরান–সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে আসেন।

ভিডিও বার্তায় ইমরান খান বলেছেন, ‘আমাকে জেলে ভরার জন্য পুলিশ এখানে এসেছে। তারা মনে করছে, ইমরান খানকে যদি জেলে ভরা যায়, তাহলে দেশের মানুষ ঘুমিয়ে পড়বে। আপনারা তাদের ভুল প্রমাণ করুন। অধিকার ও সত্যিকার স্বাধীনতার জন্য প্রত্যেকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। আমার যদি কিছু হয়, আমি যদি জেলে যাই অথবা আমাকে যদি হত্যা করা হয়, তাহলে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে, আপনারা ইমরান খানকে ছাড়াই এই লড়াই–সংগ্রাম করতে পারেন।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আইন অনুযায়ী ১৮ মার্চ পর্যন্ত আমি জামিন পেয়েছি। কিন্তু চার দিন আগেই পুলিশ আমাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে। বুধবার সকালে আমার আইনজীবীরা আদালতে এ পরোয়ানা চ্যালেঞ্জ করবেন।’ তবে গ্রেফতার হওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। এমনকি তার বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগকে ‘বানোয়াট’ বলেছেন ইমরান খান।