Joy Jugantor | online newspaper

কর্ণফুলী বাঁচাতে মাঝ নদীতে অনশন

ডেস্ক রির্পোট

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১০ নভেম্বর ২০২২

কর্ণফুলী বাঁচাতে মাঝ নদীতে অনশন

সংগৃহীত ছবি।

চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী নদী কর্ণফুলী দখল দূষণে মরতে বসেছে। কর্ণফুলীকে বাঁচাতে দুই শতাধিক সাম্পান নিয়ে নদীর মাঝখানে আট ঘণ্টা অবস্থান করে অনশন কর্মসূচী পালন করেছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনসহ পাঁচ সংগঠন। 

বুধবার (৯ নভেম্বর) এই পাঁচ সংগঠন লাগাতার আট ঘণ্টার অনশন কর্মসূচী পালন করে। নিজেদের খেয়াপারাপার বন্ধ রেখে একের পেছনে এক সাম্পান বেঁধে তপ্ত রোদেও অটল ছিলেন তারা। 

এ সময় চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে মাঝিরা এক সুরে চিৎকার করে বলেছেন- ২০১৯ সালে হাইকোর্ট প্রদত্ত চূড়ান্ত রায় অনুসারে নদী ও তীর দখল করে গড়ে উঠা ২১৮১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবেন না। 

তাদের দাবি, আগামী পনের দিনের মধ্যে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী তীরে টিকে থাকা আড়াই শতাধিক বনজ ও ঔষধি গাছ সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় আদালতের আদেশ অবমাননার অভিযোগ এনে যথাযথ আদালতে রিট আবেদন করা হবে। যার প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে।

অনশন কর্মসূচীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী বলেন, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্ণফুলী দখল ও দূষণ করে পঙ্গু করা হচ্ছে। দূষণে ৭০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে। নদী ও তীর দখল করে গড়ে উঠেছে একের পর অবৈধ স্থাপনার জঞ্জাল। দেখার কেউ নাই। 

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির সঞ্চালক কর্ণফুলী রক্ষা করার জন্য সবোচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষিত হচ্ছে। আমরা আজকে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, ১৫ দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করুন। না হয় আপনাদের তা করতে বাধ্য করা হবে।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উপদেষ্টা মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান আহমদ সিদ্দিকি বলেন, কর্ণফুলী বাংলাদেশের প্রাণ প্রবাহ। নির্মল স্বচ্ছ কর্ণফুলী এখন দখল ও দূষণে মারা পড়ছে। ৪০ লক্ষাধিক মানুষের বর্জ্য কর্ণফুলীতে পড়ছে। দশ বছর আগের ৯১০ মিটারের কর্ণফুলী এখন ৫১০ মিটার। আজকে মৃতপ্রায় কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা অচিরেই উচ্ছেদ করতে হবে।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, আমাদের এক কথা এক দাবি, হাইকোর্টের আদেশ মানতে হবে। কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করতে হবে। ২০১৪ সালে জেলা প্রশাসনের জরিপ করা চিহ্নিত অবৈধ স্থাপনা ভূমি মন্ত্রণালয় ও জাতীয় নদী কমিশনের ওয়েবসাইডে ঘোষিত। তারপরও তা কেন উচ্ছেদ হবে না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, ২১৮১ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সুনির্দিষ্ট আদেশ থাকা সত্ত্বেও তা সাড়ে তিন বছরেও কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। আমরা কি ধরে নেবো- সরকারের চেয়ে, জেলা প্রশাসনের চেয়ে দখলদারগণ শক্তিশালী এবং জেলা প্রশাসন দখলদারদের শক্তি মোকাবেলা করতে অপারগ।

পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী। অনশন চলাকালে বক্তব্য রাখেন- পরিবেশ সংগঠন গ্রিন ফিঙ্গার্স এর কো ফাউন্ডার আবু সুফিয়ান রাশেদ, রিতু ফারাবি, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য লেখক দিলরুবা খানম, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সিনিয়র সহ সভাপতি জাফর আহমদ, সহ সভাপতি লোকমান দয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদরঘাট সাম্পান সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর আহমদ প্রমুখ।