Joy Jugantor | online newspaper

একটাই পৃথিবী: প্রকৃতির ঐক্যতানে টেকসই জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ১০ জুন ২০২২

আপডেট: ০০:৫৬, ১০ জুন ২০২২

একটাই পৃথিবী: প্রকৃতির ঐক্যতানে টেকসই জীবন

সেমিনারে আলোচনা করা হচ্ছে।

‘একটাই পৃথিবী: প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’  প্রতিপাদ্যে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করেছে আরণ্যক ফাউন্ডেশন।

দিবসটি উপলক্ষে বুধবার ঢাকা আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

‘প্রারিউটিস অব ফরেষ্ট ল্যান্ডস্ক্যাপ রেস্টোরেশন অ্যান্ড বায়োজিভারসিটি কনসারভেশন ইন দি চিটাগং হিল ট্রাক্টস’ শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ও অবক্ষয়িত বন নিয়ে আলোচনা করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম কয়েক দশক আগেও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তাদের প্রথাগত চাষাবাদ পদ্ধতি যা জুম চাষ হিসেবে পরিচিত তার আবর্তকাল ২০ বছর থেকে ৫ বছরে নেমে আসাতে জুম চাষ আর টেকসই চাষাবাদ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা খুব বেশি রকমের ব্যহত হবে। তাই প্রতিবেশ সেবা পুনরুদ্ধারে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন ফরেস্ট লেন্ডস্কেপ রেস্টোরেশন বা স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততায় বন ও প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার। এলাকার সঠিক অবস্থা নিরূপণ করে যেখানে বন বা গাছপালা খুব বেশি রকমের অবক্ষয় হয়েছে সেখানে জনগণের জন্য উপকারি গাছপালা ও গুল্ম, লতাজাতীয় গাছ লাগিয়ে ভুমি ক্ষয় রোধ করে ভুমির উর্বরা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে ভুমির ব্যবহার চিহ্নিত করে ফসলের জমি, ফল গাছের জন্য জমি এবং বন ও বন্যপ্রাণীর জন্য জমি নির্ধারণ করে সেখানে প্রত্যেক সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিতে হবে যা স্থানীয়দের জীবন-জীবিকায় সহায়ক হয়। 

আরণ্যক ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যে একটি স্টাডি হাতে নিয়েছে। রাইংখ্যং রিজার্ভ ফরেস্ট বা সংরক্ষিত বনের বর্তমান অবস্থা নিরুপণ করে সেখানে বসবাসকারি জনগোষ্ঠী ও এর চারপাশে যারা বাস করছে তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে কি ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সব স্টেকহোল্ডারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন একটি পরিকল্পনা তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে। এ কাজটি করার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রীন কর্মসূচি সহায়তা প্রদান করছে। তাছাড়া, বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের একটি পাইলট প্রকল্পও আরণ্যক বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্পের শিক্ষণ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে সেমিনারে অভিমত প্রকাশ করা হয়। 

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও  জলবায়ু  পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন। এতে সভাপতিত্ব করেন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রাকিবুল হাসান মুকুল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ রেস্টোরেশন স্পেশালিস্ট  ড. মহা. আব্দুল কুদ্দুস। আলোচক হিসেবে উপস্থিত  ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান  বন সংরক্ষক ও সভাপতি ইনস্টিটিউশন অফ  ফরেস্টার্স ইশতিয়াক উদ্দিন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক, ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, এফএও বাংলাদেশের এনভারমেন্ট , ফরেস্ট এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ ইউনিটএর টিম লিডার ড. ক্রিস্টেফার জনসন এবং বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের সিনিয়র এনভারমেন্টাল স্পেশালিস্ট ড. ইশতিয়াক সোবহান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ, এবং প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী। এসময় অরণ্য ফাউন্ডেশনের  লিঁয়াজো অফিসার ইসরাত জাহান ইমাসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।