Joy Jugantor | online newspaper

বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তির পথে লেজবিহীন উল্লুক 

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৩ মার্চ ২০২২

বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তির পথে লেজবিহীন উল্লুক 

বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তির পথে লেজবিহীন উল্লুক 

চার দশক আগেও বাংলাদেশের বনে বসবাসকারী উল্লুকের সংখ্যা ছিল প্রায় তিন হাজার। কিন্তু সেখান থেকে এখন সেটি মাত্র কয়েকশো প্রাণীতে এসে ঠেকেছে।

মানুষের মতো পরিবার প্রথায় অভ্যস্ত এই প্রাণীটি বিশ্বজুড়েই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএনের বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীদের লাল তালিকায়ও রয়েছে এই প্রাণীটি।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, বাংলাদেশের বনগুলোতে থাকা উল্লুক এখন বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে অনেকটা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে। দেশে গত চার দশকে ওয়েস্টার্ন হোলক গিবন বা পশ্চিমা উল্লুকের সংখ্যা আশি শতাংশ কমে গেছে।

মানুষের সঙ্গে এই প্রাণীগুলোর জীবনযাপন ধরনের অনেক মিল রয়েছে। এরাও পরিবার আকারে থাকতে পছন্দ করে। একবার কারো সঙ্গে জুটি তৈরি করলে আজীবন তার সঙ্গেই থেকে যায়। বানরের সঙ্গে উল্লুকের বড় পার্থক্য হলো, এই প্রাণীটির যার লেজ নেই। পুরুষ উল্লুক কালো আর স্ত্রী উল্লুক ধুসর লোমের হয়ে থাকে।

২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু করে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের ২২টি বনে গবেষণা করে ৪৬৮টি উল্লুকের দেখা পেয়েছেন গবেষকরা। সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে মৌলভীবাজারের রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে।

প্রধান গবেষক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুন নাহার বলেন, পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য এই প্রাণীটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এরা ফলের বীজ বনাঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে। যার মাধ্যমে অরণ্যের বিস্তারে সহায়তা হয়।

উল্লুকগুলো মূলত বড় আকারের গাছের মগডালে বসবাস করে। চলাফেরার জন্য তারা এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফ দিয়ে বিচরণ করে। এসব প্রাণী খুব একটা মাটির কাছাকাছি নেমে আসে না।

খাবারের জন্যও বিভিন্ন গাছের ফলমূল, ফুল, কচি পাতা খেয়ে থাকে। এছাড়া পাখির ডিম ও ছোট আকারের পোকামাকড়ও খেয়ে থাকে।গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতে এই প্রজাতির ২৬০০ উল্লুক রয়েছে, যার বেশিরভাগই আসামে। মিয়ানমারে কিছু রয়েছে, যার সংখ্যা পরিষ্কারভাবে জানা যায় না। বাংলাদেশে রয়েছে সাড়ে চারশোর মতো উল্লুক। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে প্রাণীটি।