Joy Jugantor | online newspaper

আজ জহির রায়হানের ৮৮তম জন্মদিন

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১৯ আগস্ট ২০২২

আজ জহির রায়হানের ৮৮তম জন্মদিন

জহির রায়হানের সংগৃহীত ছবি


চলচ্চিত্রকার, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক তিন পরিচয়েই সফল এক নাম আবু আবদার মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। জহির রায়হান নামেই তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন।  

আজ, ১৯ আগস্ট তার ৮৮তম জন্মদিন। ১৯৩৫ সালের এই দিনে ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু তার মৃত্যুর দিনটি অজ্ঞাতই রয়ে গেছে আজও। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি মিরপুরে তার ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। ধারণা করা হয় মিরপুরে বিহারী এলাকায় ছদ্মবেশী পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির আঘাতে তিনি মারা যান।  

তার বাবার নাম মোহাম্মদ এমদাদউল্লাহ এবং মায়ের নাম সৈয়দা সুফিয়া খাতুন। বাবা ছিলেন একজন আইন ব্যবসায়ী। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করা জহির রায়হান অল্প বয়সেই কমিউনিস্ট রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন পার্টি নিষিদ্ধ থাকায় তিনি বার্তাবাহকের কাজ করতেন। এ সময়ে মনি সিংহের দেওয়া রাজনৈতিক নাম ‘রায়হান’ গ্রহণ করে তিনি হয়ে যান জহির রায়হান।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম যে ১০ জনের দলটি ১৪৪ ধারা ভেঙেছিল, জহির রায়হান তাদেরই একজন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন সরাসরি। এ সময় তিনি ক্যামেরা হাতে সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে।

ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু জহির রায়হানের। চলচ্চিত্রেও তার আগ্রহ সে সময় থেকেই। ১৯৫০ সালে ‘যুগের আলো’ পত্রিকার মাধ্যমে তার সাংবাদিকতা শুরু হয়। ১৯৫৬ সালে তিনি সম্পাদক হিসেবে ‘প্রবাহ’ নামে একটি পত্রিকায় যোগ দেন। 

১৯৫৭ সালে প্রথম কাজ করেন পাকিস্তানি চিত্রপরিচালক জারদারির সঙ্গে। তার প্রথম ছবি উর্দু ভাষার ‘জাগো হুয়া সাবেরা’। ১৯৬১ সালে তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কখনও আসেনি’ মুক্তি পায়। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের প্রথম রঙিন ছবি ‘সঙ্গম’ নির্মাণ করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমাস্কোপ ছবি ‘বাহানা’। ‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমাতে প্রতীকী কাহিনীর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনকে চিত্রিত করেন তিনি। এর মাধ্যমে জনগণকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। 

১৯৭১ সালের এপ্রিলে জহির রায়হান চলে যান কলকাতায়। শুরু করেন তার অন্য রকম মুক্তিযুদ্ধ। ক্যামেরা হাতে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন সীমান্তে এবং এক শরণার্থী শিবির থেকে আরেক শরণার্থী শিবিরে। নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বিষয়টি তিনি চলচ্চিত্রে ব্যবহার করতে চাইতেন প্রথম থেকেই। 

লাতিন আমেরিকার বিপ্লবী ধারার ছবিগুলোই ছিল তার মূল প্রেরণা। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছিল কিউবান চিত্রপরিচালক আল ভারেজ। মূলত তার প্রেরণায় তিনি নির্মাণ করেন ‘স্টপ জেনোসাইড’।

১৯৭২ সালে বাংলা উপন্যাসে অবদানের জন্য তাঁকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (মরণোত্তর) দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এই কথাসাহিত্যিক।