Joy Jugantor | online newspaper

তেলের টাকা বাকি

গাড়ির অভাবে ডুয়ার্সে বন্ধ হতে পারে জঙ্গলে নজরদারি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১০ জুন ২০২১

গাড়ির অভাবে ডুয়ার্সে বন্ধ হতে পারে জঙ্গলে নজরদারি

সংগৃহীত ছবি

ডুয়ার্সে এবার বন্ধ হতে বসছে জঙ্গলে নজরদারি ও লোকালয়ে চলে আসা বন্যপ্রাণী উদ্ধারের কাজ। এছাড়াও বন্ধ হয়ে যেতে পারে ডুয়ার্সের সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও জাতীয় উদ্যানের নজরদারিও। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পেট্রল ও ডিজেলের দাম মেটানোর সমস্যা। কারণ, প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি পেট্রোল ও ডিজেলের বিল বাকি রয়েছে। পাম্প মালিকরা ধারে আর তেল দিতে অস্বীকার করে দিয়েছেন। তাঁরা পরিষ্কার জনিয়ে দিয়েছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত বকেয়া টাকা মেটানো হচ্ছে, তাঁরা তেল দিতে পারবেন না। সেই কারণেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে লোকালয়ে বন্যপ্রাণী চলে এলে বনকর্মীরা যেতে পারবেন না। কারণ তেলের অভাবে গাড়ি বসে গিয়েছে।

বনকর্মীদের অধিকাংশ সময়ই যেতে হয় গাড়িতে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে হলে ব্যবহার করতে হয় গাড়ি। লোকালয়ে বন্যপ্রাণী চলে এলে গাড়ি নিয়েই ছুটতে হয়। তবে বনকর্মীদের এই কাজে এবারে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে গাড়ির তেলের সমস্যা। ফলে উত্তরবঙ্গ জুড়েই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বন কর্মীদের নজরদারির কাজ। জলপাইগুড়ি জেলার রয়েছে চারটি স্কোয়াড। মালবাজার ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড-২, খুনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড, বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড-৩, রামসাই মোবাইল স্কোয়াড। এর পাশাপাশি দার্জিলিং জেলায় রয়েছে দার্জিলিং ডিভিশনের ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড-১ শুকনা, বৈকণ্ঠপুর ডিভিশনের বেলাকোবা স্কোয়াড। বিশেষ করে জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নজরদারির ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে এই স্কোয়াডগুলি। জঙ্গল নিরাপত্তা দেওয়া থেকে চোরা শিকারিদের প্রবেশ আটকাতে কাজ করে থাকেন তাঁরা। তবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে একদিকে যেমন জঙ্গলে নজরদারি বন্ধ হয়ে যাবে, তেমনই চোরা শিকারিদের হানা ও বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনা বাড়তে পারে।

বানারহাট চা বাগানের বাসিন্দা অজয় মাহালির অভিযোগ, ‘‘এই মুহূর্তে হাতি লোকালয়ে চলে এলে বনকর্মীদের ফোন করলেও তাঁরা ‘গাড়িতে তেল নেই, আসছি আসছি’ বলে টাল বাহানা করছেন।’’ এক বনকর্মী বলেন, ‘‘তেলের সমস্যা। সরকার যদি গাড়ির তেল না দেয় আমরা কী করে আসব? লক্ষ লক্ষ টাকার বিল পেট্রল পাম্পে বকেয়া রয়েছে। তাই পাম্প মালিকরা আমাদের তেল দিতে অস্বীকার করছেন। এদিকে রাত হলেই হাতির পাল এলাকায় ঢুকে পড়ে। আমাদের ভয় একটাই। কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে দায় কে নেবে? সরকার নাকি বন দফতর? তাই আমরা চাই সরকার দ্রুত বনকর্মীদের এই সমস্যার সমাধান করুক।’’

বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জার শুভাশিস রায় বলেন, ‘‘বর্তমানে রেঞ্জ অফিসে দু’টি গাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটি গাড়ি সারাতে দেওয়া হয়েছে। একটি গাড়ি নিয়েই ডিউটি চলছে। তেলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কোনও পেট্রল পাম্প তেল দিতে চাইছে না। কারণ, আগের অনেক বকেয়া টাকা রয়েছে। আমাদের কাজ চলছে। কাছাকাছি এলাকাগুলোতে যতটা পারছি আমরা পায়ে হেঁটে নজরদারি চালাচ্ছি। দূরের জায়গার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেক সময় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে।’’