এক পায়েই ভর দিয়ে ভ্যান চালাচ্ছেন নুর মোহাম্মদ।
হঠাৎ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করেন তিনি। একটি পা কেটে ফেলতে হয় তার। চিকিৎসা নিয়ে গ্রামে ফিরে এসে শুরু করে ঝাঁলমুড়ি-পাপড় বিক্রি। এতে সংসার চলে না তার। পরিবর্তন করলেন পেশা। জমানো ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনলেন ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান। এক পায়ে ভর দিয়ে ভ্যানের চাকা ঘুরিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বড় বড় বিল্ডিংয়ে সাহসিকতার সাথে রঙয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন যুবক নুর মোহাম্মাদ। তার এক পা কেটে ফেলা হলেও পরাজিত হননি জীবন যুদ্ধে।
নুর মোহাম্মদ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত নজরুল ইসলাম। তার সংসারে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, এক ভাই , এক বোন, স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী শিশু সন্তান। খুব কষ্টে সংসার চালান তিনি। তার এ কষ্ট দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন তাকে। কষ্ট থাকলেও তা দূরে সরে দিয়ে পরিবার নিয়ে সুখেই দিন কাটাচ্ছেন নুর মোহাম্মদ।
কথা হয় নুর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাবা-মায়ের সংসারের অভাবের কারণে পড়াশোনা করতে পারেননি। ২০০৫ সালে ঢাকার এক পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেছিলেন। এরপরে ২০০৭ সালে শুরু করেন রঙমিস্ত্রীর কাজ। ভালোই চলছিল সবকিছু। তার জীবনে অন্ধকার নেমে আছে ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় রঙের কাজ করছিলেন একটি তিন তলা ভবনে।
তিনি বলেন, ওই ভবনের তিনতলায় রঙের কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মাটিতে পড়ে যান। বিদ্যুতায়িত হয়ে তার পা, পিঠ, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে ঝলছে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা নেন তিনি। সেখানে তার ডান পায়ের হাটু পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। ৬ মাস চিকিৎসা নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। তার রোজগারেই পুরো সংসার চলছে।