
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে । এতে এক আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে । এক বছরের বেশি সময় পর সোনার আউন্স দুই হাজার ডলারের ওপরে উঠলো । রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধার পর গত বছরের মার্চে প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছিল । এরপর এই প্রথম দামি এই ধাতুটির দাম আবার দুই হাজার ডলার স্পর্শ করলো ।
তথ্য পর্যালোনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৯৮০ ডলার। সেখান থেকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ৩ এপ্রিল লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমে প্রতি আউন্স ১ হাজার ৯৫০ ডলারে নেমে যায় ।
অবশ্য এই দরপতনের পর ওই দিনই ঘুরে দাঁড়ায় সোনা । ৩ এপ্রিল লেনদেনের এক পর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১ হাজার ৯৯০ ডলারে উঠে যায় । পরের কার্যদিবস ৪ এপ্রিল তা আরও বেড়ে ২ হাজার ২৪ ডলারে ওঠে । পরের কার্যদিবস ৫ এপ্রিলও সোনার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে । এতে ৫ এপ্রিল লেনদেনের এক পর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৩২ ডলারে উঠে যায় ।
তবে শেষ দুই কার্যদিবসের লেনদেনে সোনার দাম কিছুটা কমেছে । এরপরও প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলারের ওপরে থেকে সপ্তাহ শেষে হয়েছে । সপ্তাহ শেষে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮ দশমিক শূন্য ২ ডলার । এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দামি এই ধাতুটির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪০ ডলার । আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১০ দশমিক ৭২ ডলার ।
এর আগে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া । রাশিয়া আগ্রাসন শুরু করার পর পরই আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থকে । এতে ৮ মার্চ প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫২ ডলারে উঠে যায় । অবশ্য গত বছরের মার্চ মাস শেষ হওয়ার আগেই সোনার আউন্স দুই হাজার ডলারের নিচে নেমে যায় ।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে । এরই মধ্যে প্রতি ভরি সোনার গহনার দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে । সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৯ হাজার ১৪৪ টাকা করা হয়েছে । এতে এক ভরি সোনার গহনার দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে । কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয় । সেই সঙ্গে মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা । ফলে এখন ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ১ লাখ ৭ হাজার ৭৭৫ টাকা দিতে হচ্ছে । দেশের বাজারে এর আগে কখনো এত দামে সোনার গহনা বিক্রি হয়নি ।
ভালো মানের সোনার পাশাপাশি ২ এপ্রিল থেকে বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের সোনার দাম । ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৯৪ হাজার ৬৫৩ টাকা করা হয়েছে । ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২২৫ টাকা বাড়িয়ে ৮১ হাজার ১২৩ টাকা করা হয়েছে । আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৭ হাজার ৫৯৩ টাকা করা হয়েছে । এই দামের সঙ্গে মজুরি ও ভ্যাট যোগ করে দেশের বাজারে সোনার গহনা বিক্রি করা হচ্ছে ।