Joy Jugantor | online newspaper

দেশে পেঁয়াজের বাড়তি দাম পড়তে শুরু করেছে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৪ অক্টোবর ২০২১

দেশে পেঁয়াজের বাড়তি দাম পড়তে শুরু করেছে

ফাইল ছবি।

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা পেঁয়াজের দামের বাড়তি ঝাঁজ আবার কমতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বাজারে কেজিতে ১০ টাকার মতো দাম কমেছে। চাহিদার তুলনায় মজুত পর্যাপ্ত হওয়ায় দাম আর বাড়বে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে দেশে পেঁয়াজের দামে যেন আগুন লাগে। এবার সেপ্টেম্বরের শুরুতে তেমনটা ঘটেনি, স্বস্তিতে ছিল ক্রেতারা। তবে সেপ্টেম্বরের স্বস্তি উবে যায় অক্টোবরের শুরুতেই। হু হু করে বাড়তে থাকে দাম, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই দাম বেড়ে হয় প্রায় দ্বিগুণ।

খুচরায় প্রতি কেজি ৪০ টাকার পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা ছুঁয়েছে। এখন তা আবার ৭০ টাকায় নামছে, আরও নামবে বলেই আশা করছেন বিক্রেতারা।

বাজারে এখন দেশি ও আমদানি দুই ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যায়। দেশি পেঁয়াজ আবার দুই ধরনের। পাইকারি বাজারে পাবনার পেঁয়াজ ফরিদপুরের পেঁয়াজের চেয়ে আকারে বড় এবং কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেশি। তবে খুচরায় তেমনটি থাকে না। খুচরা বাজারে বুধবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা ও পাইকারিতে ফারাক ১৫ টাকা

রাজধানীর পাইকারি বাজারে এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। সর্বোচ্চ চূড়া থেকে দাম কমেছে ১০-১২ টাকার মতো। এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে খুচরাতেও। তবে দামের ফারাকটাও বেশি। আড়তে এখন যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে খুচরায় তার থেকে কমপক্ষে ১৫ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তে যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, পাইকারি বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় আর খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকার কাছাকাছি।

বাজার ভরা দেশি পেঁয়াজ

রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজারের সর্বত্র দেশি পেঁয়াজে ভরা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের প্রতিটি দোকানেই বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ একেবারেই কম।

শ্যামবাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী হাজি মো. মাজেদ বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও যথেষ্ট রয়েছে, দামও কমেছে। আমদানির তেমন প্রয়োজন নেই। ভারতের বাজারে দাম একটু। তবে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে এমন কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। আগে যে পেঁয়াজের দাম ৬২-৬৪ টাকা ছিল, এখন তা ৫২ টাকায় নেমে এসেছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা সামছুর রহমান বলেন, বাজারে এখন প্রচুর দেশি পেঁয়াজ রয়েছে। এর মধ্যে পাবনার পেঁয়াজ ভালো, দামেও একটু বেশি। তবে ফরিদপুরের পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি। ভারতের পেঁয়াজ অনেক কম, দামও কম, মানুষ চায়ও কম।

তিনি বলেন, বুধবার প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ফরিদপুরের পেঁয়াজ ২৯০ থেকে ২৯৫ টাকা, পাবনার পেঁয়াজ ৩০০ থেকে ৩০৫ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অন্য এক পাইকারি বিক্রেতা শাহবাজ উদ্দিন বলেন, ‘দাম বাড়ছে দেখে অনেকেই বেশি পেঁয়াজ কিনে বাসায় নিয়েছে। এ জন্য দুই দিন বাজারে পেঁয়াজ একটু কম ছিল। এখন বাজার ভরা পেঁয়াজ। প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৬০ টাকায়।’

তবে খুচরা বিক্রেতারা জানান, তারা দুই-তিন দিনের পেঁয়াজ একসঙ্গে কেনেন। তাই বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ বেশি বিক্রি করছেন। এগুলো শেষ হলে নতুন করে কম দামে পেঁয়াজ আনতে পারলে তারাও কম দামে বিক্রি করবেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে এ মুহূর্তে পেঁয়াজের মজুত যথেষ্ট রয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজও বাজারে ঢুকছে। এ অবস্থায় দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশে বছরে পেঁয়াজের মোট চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। এর বিপরীতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় ২৯ দশমিক ৫৫ লাখ টন। এর ২৫ শতাংশ নষ্ট বা পঁচে যাওয়া বাদ দিলেও বাজার উপযোগী পেঁয়াজ দাঁড়ায় ২১ লাখ টনে। বাকিটা আমদানির মাধ্যমেই জোগান দিতে হয়।

তবে দেশে এই মুহূর্তে ৪ লাখ ২১ হাজার ৪২৪ টনের মজুত রয়েছে। সেই সঙ্গে আমদানি হয়েছে এবং পথে আরও প্রায় ৪ লাখ টন। এক মাস পরই নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষ দিকে বাজারে উঠবে দেশি আগাম জাতের পেঁয়াজ। তাই দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।