Joy Jugantor | online newspaper

‘ও আমার ভালোবাসা বুঝল না’ লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১০ এপ্রিল ২০২১

‘ও আমার ভালোবাসা বুঝল না’ লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

নিহত তামান্না আফরিন

বরিশালে প্রেমিকের প্রতারণার শিকার হয়ে ক্ষোভে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক স্কুলছাত্রী। এর আগে একটি সুইসাইড নোটে প্রেমিকের নাম ও আত্মহত্যার কারণ লিখে গেছে সে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা।

নিহত তামান্না আফরিন নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার রফিকুল ইসলাম টিপুর মেয়ে। সে দক্ষিণ আলেকন্দা এআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কথিত প্রেমিক সাদমান গালিব নগরীর জুমির খান সড়কের বাসিন্দা। স্থানীয়রা তাকে বখাটে হিসেবে চেনে।

সুইসাইড নোটে তামান্না লিখেছে- ‘আমি আজ সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য শুধু একজনই দায়ী। তার নাম হলো সাদমান গালিব। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু ও (গালিব) আমার সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চায় না। তাই আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না ভেবে সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমি সাদমানকে অনেক ভালোবাসি, ও বুঝল না। আশা করি আমার মরার পর ও (গালিব) আমার ভালোবাসাটা অনুভব করবে। আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না। বিদায় সাদমান।’

নিহতের বাবার অভিযোগ তামান্নাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে তার কথিত প্রেমিক সাদমান গালিব। তিনি জানান- প্রায় ছয় মাস আগে খাবারের সঙ্গে চেতনাশক মিশিয়ে তামান্নাকে অচেতন করে আপত্তিকর ছবি তোলে সাদমান গালিব। এরপর সেই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বিগত সময়ে তামান্নার কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা নেয় এবং শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তামান্না।

রফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, সেদিন আমার মেয়েকে অচেতন অবস্থায় সাদমান গালিবের বাসা থেকে নিয়ে আসি। এরপর প্রায় ছয় মাস তামান্নাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে সে। কিছুদিন আগে আমার মেয়ের আপত্তিকর ছবিগুলো নিয়ে উধাও হয়ে যায় গালিব। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তামান্না। ২ এপ্রিল দুপুরে নানাবাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে নিজের ওড়নায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর তামান্নার গণিত খাতার শেষ পৃষ্ঠায় তার হাতে লেখা সুইসাইড নোট পাই। মঙ্গলবার ওই সুইসাইড নোটসহ কোতোয়ালি থানায় গিয়ে সাদমান গালিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই অলিভ জানান, নিহত তামান্না আফরিনের মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। মোবাইলে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান জানান, মেয়েটির মোবাইলে পাওয়া আলামত ও সুইসাইড নোট যাচাই করা হচ্ছে। অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তামান্না আফরিনের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয় ২০১৮ সালে। এরপর থেকে তামান্না ও তার ছোট বোন তাহিয়া নগরীর কাজীপাড়া এলাকায় নানা হাফেজ মো. আলমগীরের বাসায় থাকতো। কাজের ব্যস্ততায় মেয়েদের খোঁজ নিতে পারতেন না রফিকুল ইসলাম টিপু ও তার স্ত্রী জাকিয়া বেগম। বাবা-মায়ের শিথিলতার সুযোগে পার্শ্ববর্তী এলাকার সাদমান গালিবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তামান্না।