Joy Jugantor | online newspaper

প্রাইভেট পড়ে না ছাত্রী, স্কুল থেকে বের করে দিলেন ক্ষুব্ধ প্রধানশিক্ষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১ জুন ২০২৩

আপডেট: ০৩:৪২, ১ জুন ২০২৩

প্রাইভেট পড়ে না ছাত্রী, স্কুল থেকে বের করে দিলেন ক্ষুব্ধ প্রধানশিক্ষক!

পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বগুড়ার কাহালুতে প্রাইভেট না পড়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও স্কুলে যেতে পারছে না ছাত্রীটি। গত ২৩ মে পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। গতকাল বুধবার ওই ছাত্রীর পরিবারের কাছে বিষয়টি জানা যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মনিকা আক্তার। ওই শিক্ষার্থী কাহালু উপজেলার কালিশপুরী গ্রামের আব্দুল মোমিনের মেয়ে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে এক বান্ধবীর সঙ্গে বসে মনিকা আক্তার গল্প করছিল। এ সময় প্রধানশিক্ষক মিজানুর রহমান তাকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে ও স্কুল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেন। পরে ওই ছাত্রী অভিযোগ নিয়ে কাহালু থানায় যায়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তার পরমার্শে মনিকা কাহালু উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেনের কাছে অভিযোগ জানান। 

স্কুলছাত্রী মনিকা আক্তার বলেন, ‘প্রধানশিক্ষক মিজানুর রহমান ইংরেজি বিষয়ে বিদ্যালয়ের বাহিরে প্রাইভেট পড়ান। আমি উনার কাছে না পড়ে অন্য এক শিক্ষকের কাছে ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ি। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক আমাকে নানা বিষয়ে বিদ্যালয়ে হেয় করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার সকালে ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ার জন্য বিদ্যালয়ের সামনে বসে ছিলাম। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রধানশিক্ষক আমাকে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বলেন, তোমার মতো ছাত্রী আমার দরকার নেই বের হয়ে যাও। এসময় তিনি আমাকে জোরপূর্বক বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন ও অন্য ছাত্রীদের আমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন।’

মনিকা আক্তার আরও বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগ দেওয়ার পর গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইজন ছেলে মোটরসাইকেলে এসে রাস্তার মধ্যে আমাকে আটকিয়ে অভিযোগ ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে। এক সপ্তাহ হচ্ছে ভয়ে আমি বিদ্যালয়ে যাইনি। বিদ্যালয় থেকে আমার অভিভাবককেও ডাকেনি।’ 

এ ঘটনায় প্রধানশিক্ষকের প্রত্যাহার ও বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ দাবি করে মনিকা। 

মনিকার বাবা আব্দুল মোমিন বলেন, আমার মেয়ে যদি কোন ভুল করে থাকেন তাহলে প্রধান শিক্ষক আমাকে ডাকতে পারতেন। আমাকে কিছু না বলেই মেয়েকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। আমরাতো এত কিছু বুঝি না। উপজেলাতে এক বড় স্যারকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেছেন। যাই হোক আমার চাওয়া মেয়ে যেনো বিদ্যালয়ে ফিরতে পারে। মেয়কে স্কুল থেকে এভাবে বের করে দিয়ে প্রধানশিক্ষক ঠিক করেনি। এখন মেয়ে বিদ্যালয়েও যেতে পারে না।

স্থানীয় এক যুবক মুক্তার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক নতুন আসার পর থেকেই নানা অনিয়ম শুরু করেছেন। এরআগে তিনি ৭০ টাকার ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি শিক্ষার্থীদের থেকে ৩৫০ টাকা নিয়েছিলেন। পরে গ্রামবাসীর চাপে সব টাকা ফেরত দেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করছেন। এর বেশি কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান প্রধানশিক্ষক। 

কাহালু উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেন জানান, মনিকার অভিযোগ আমলে নিয়ে রোববার তদন্ত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে এ বিষয়ের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনিকা বিদ্যালয়ে না যাওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।