Joy Jugantor | online newspaper

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

টানা কয়েক বছর ধরে গমের ফলন ও দাম  দুটোই ভাল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ব্যাপক পরিমাণে গমের চাষাবাদ করেছে প্রান্তিক চাষিরা। মূলত এ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গম চাষের পাশাপাশি সারা বছর এ অঞ্চলের চাষিরা বিভিন্ন ধরণের ফসল ফলে জীবন-জীবিকার নির্বাহ করেন। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের বিস্তৃত মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো এক সবুজের সমারোহ। যেন চারিদিকে কৃষকদের মাঠ জুড়ে গমের সবুজ রঙে ভরে গেছে। ফসলের মাঠ জুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ। নয়ন জুড়ানো দৃশ্য মেতে উঠেছে ফসলের মাঠে। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলিছে প্রকৃতির এক অপরূপ রূপ। মাঠে সবুজ ফসল দেখে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের গম বীজ সরবরাহ করায় কৃষকরা গম চাষে বেশি ঝুঁকছেন। 

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে গমের ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। পাশাপাশি গত বছরের চেয়ে এবছরও ভাল ফলনের স্বপ্ন বুনছেন গম চাষিরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সরাসরি কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতাসহ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে গম ক্ষেত দেখে বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়ায় কৃষকেরা গমের চাষাবাদ বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি দিয়েছেন ভাল ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় প্রতি বছর চাষিরা গম চাষে লাভবান হয়েছে। এ বছরও গমের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি কৃষকরা ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৪ থেকে ১৫ মন পর্যন্ত ফলন আসে বলে জানান কৃষি অফিস ও গম চাষিরা।

ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চন্দ্রখানা এলাকার গম চাষি জয়নাল আবেদিন ও আবু বক্কর সিদ্দিকসহ পাঁচ ছয় জনের একটি গ্রুপ কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ১২ বিঘা জমিতে গমের চাষাবাদ করেছেন। এই দুই চাষি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গম চাষে খরচ হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। গত বছরের চেয়ে এবছরও গমের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভাল দামের স্বপ্ন বুনছেন তারা। এই দুই কৃষকসহ তার গ্রুপটি টানা চার-পাঁচ বছর ধরে গমের চাষাবাদ করে লাভবান হয়ে আসছেন।  

শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জ্যোতিন্দ্র নারায়ণ এলাকার কৃষক নুর আলী বলেন,গত বছর ১ বিঘা জমিতে গমের চাষাবাদ করেছি। ভাল ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় এবছর আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি অফিসের সার ও বীজ দিয়ে দুই বিঘা জমিতে গমের চাষাবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এখন পর্যন্ত ক্ষেতের গম বাম্পার ফলন দেখছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৬ মন করে ফলন আসবে। যেহেতু বর্তমান গমের বাজার মূল্য সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাই ভাল দাম পাবো বলে আশা করছি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, এ বছর উপজেলায় ৩০৫ হেক্টর জমিতে কৃষকরা গমের চাষাবাদ করেছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকরা উন্নতমানের গম বীজ দিয়ে চাষিরা ফসল ফলিয়েছে। কৃষি অফিস থেকে ৭০০ কৃষককে গম বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের মাঠে মাঠে গিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা মনে গম বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বছর গমের বাম্পার ফলনসহ ভাল দাম পাবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।