Joy Jugantor | online newspaper

রংপুরে পশুখাদ্যের দামবৃদ্ধিতে খামারিদের বিক্ষোভ

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২৫ মে ২০২২

রংপুরে পশুখাদ্যের দামবৃদ্ধিতে খামারিদের বিক্ষোভ

প্রতীকী ছবি

পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রংপুর প্রাণিসম্পদ অফিস ঘেরাও করেছে খামারিরা। প্রতিবাদের সময় অনকে খামারিরা গরু নিয়েই হাজির হন সেখানে। 

এ সময় খামারিরা আসন্ন বাজেটে পুশ খাদ্যে ভর্তুকি দেয়ার দাবি জানান। 

বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সেখানে তারা অবস্থান করেন। পরে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন রংপুর ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর ইসলাম মিলন।  তিনি বলেন, ‘গত ছয় মাসের ব্যবধানে খামারগুলোতে গরুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। যে হারে গোখাদ্যের দাম বাড়ছে তাতে গরু পালন করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশুখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেশি হওয়ায় গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক খামারি। এ অবস্থায় দুধের দাম বাড়ানো ও সরকারি উদ্যোগে খামারিদের রেশনিং পদ্ধতিতে পশুখাদ্য সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসিফুল ইসলান বলেন, ‘আজ থেকে দুই মাস আগে যে গোখাদ্যের দাম ৩০/৩৫টাকা ছিল এখন তার দাম হয়েছে ৫০/৫২ টাকা। এই অবস্থায় দুধের উৎপাদন খরচ প্রতি কেজিতে ৬০ টাকার বেশি। তবে দুঃখের বিষয় যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা, প্রাণ, ব্র্যাক ইত্যাদি আমাদের খামারিদের কাছে দুধ নিচ্ছে ৩৫/৩৮ টাকায়। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা করে লস দিলে আমরা টিকতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি পশু খাদ্যের দামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন দুধের ক্রয়মূল্য বাড়ায়। সামনে বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাওয়া, গোখাদ্যে ভুর্তকি দিতে হবে। ভুর্তুকি দিলে এই শিল্পটা টিকে থাকবে।’

নগরীর বুড়িরহাট এলাকার খামারি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘৭/৮ মাস আগেও আমার খামারে ১২টি গরু ছিল। পশুখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় ৫টি গরু বিক্রি করে দিয়েছি। বাকিগুলোয় হয়তো বিক্রি করতে হবে।’

হাজিরহাট এলাকার খামারি আজম আলী পারভেজ বলেন, ‘আমার খামারে ছোট বড় মিলে সাতটা গরু ছিল, পোষাতে না পেরে ৫টা বিক্রি করে দিয়েছি। আশা ছিল, কোরবানি ঈদে বিক্রি করব, সেটা হয় নাই। লোকসান করে বিক্রি করে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ঘাসের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। সেই ঘাস দিয়ে এখন আর হয় না। বাইরে থেকে খাবার সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু যেভাবে গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে তাতে গরু পালন করা সম্ভব নয়। আমাদের ভুর্তকি দিতে হবে।’

রংপুর জেলা ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার খামারি রয়েছেন।

বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ রংপুরের পরিচালক ওয়ালিওর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। আমদের তো কিছু করার থাকে না।’

তিনি বলেন, ‘খামারিদের কথায় যুক্তি আছে। তাদের যেহেতু উৎপাদন খরচ বেড়েছে, দুধের দামও বাড়ানো উচিত।’