Joy Jugantor | online newspaper

গত বছরের ক্ষতি এবার পুষিয়ে নিতে চান আম চাষিরা 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ২০ জানুয়ারি ২০২২

গত বছরের ক্ষতি এবার পুষিয়ে নিতে চান আম চাষিরা 

ছবি সংগৃহীত

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এবার এই রাজ্যে ১০টি প্রচলিত জাতের আম বেশি চাষ হচ্ছে। বাগানে আম গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তাদের প্রত‌্যাশা, এবার যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে তারা গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৬২২ বিঘা জমিতে আম চাষ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে ৩০ হাজার ৯১১ বিঘা বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে এবার। এ বছরে মোট ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০টি গাছে আমের ফলন হবে।

জেলার সদর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৪৭০ বিঘা জমিতে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০টি গাছ রয়েছে। শিবগঞ্জে ১ লাখ ৫২ হাজার ১৪ বিঘায় ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ৯৫০টি গাছ। গোমস্তাপুরে ৩১ হাজার ৫২৩ বিঘা জমিতে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৩৫টি গাছ। নাচোলের ২ লাখ ৮ হাজার ২৭৩ বিঘাতে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭১০টি গাছ। ভোলাহাট উপজেলায় ২ হাজার ৭৪০ বিঘা জমিতে ৩ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫টি আম গাছ রয়েছে।

আম বাগানি মুনিরুল ইসলাম। তিনি ২৪ বিঘার বাগানের মালিক। মুনিরুল বলেন, গতবারের চেয়ে এবার আম উৎপাদনের জন্য মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি। গত বছরে করোনার কারণে আমের দাম পাওয়া যায়নি। তাই অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার করোনার মধ্যে আমের বাজারদর যেন না কমে এদিকে সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবেন বলে আশা করি।

তিনি আরও বলেন, এবারের মৌসুমের প্রথম থেকে আবহাওয়া ভালো আছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবার আম ভালো ফলন হবে। আমের ফলন ভালো হলে গত বছরের লোকসানের টাকাগুলো উঠিয়ে নেএক্য়াস যাবে।

ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব জানান, গক বছরে আমের ভরা মৌসুমের সময় করোনা সংক্রমণ রোধে জেলায় বিশেষ লকডাউন দেওয়া হয়। ফলে আমের ন‌্যায্যমূল্য পাননি চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এবার ওমিক্রনের সংক্রমণ রোধে আম বাজারে কড়াকড়ি করলে চাষিরা আম চাষে আরও নিরুৎসাহিত হবে। তবে বাজার মূল্য ঠিক রাখতে আম বহনের মাধ্যম কুরিয়ার সার্ভিসের ভাড়া যাতে না বাড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবং অনলাইন মার্কেটিং নিরাপদ রাখতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, স্বাদ আর রঙের জন্য বহির্বিশ্বে আমাদের জেলার আমের সুনাম রয়েছে। কিন্তু বিমানের ভাড়া বেশি হওয়ায় আমের দামও বেড়ে যায়। এদিকে দাম বাড়লে বাইরের দেশের লোকজন আম কিনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সরকার যদি বিমানের ভাড়া কমায়, তাহলে বাইরে আমের দামও স্বাভাবিক থাকবে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, এ মৌসুমে শিবগঞ্জ উপজেলায় বেশি আম চাষ হচ্ছে। আর সব চেয়ে কম আম চাষাবাদ হচ্ছে ভোলাহাট উপজেলায়। সবচেয়ে বেশি আশ্বিনা জাতের আম চাষ হচ্ছে। এবার আমের মৌসুমে ৬৮ হাজার ৭০৯ বিঘা জমিতে এ জাতের আম চাষ করছেন চাষিরা। এসব জমিতে এ জাতের আমের গাছ রয়েছে ৭ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৫টি। 

তিনি আরও জানান, দেশ-বিদেশে ফজলি আমের চাহিদা আছে। ফলে এবার জেলায় ৫৯ হাজার ৮৮৬ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে এ জাতের আম। এসব জমিতে ফজলি আমের গাছ রয়েছে ৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৫টি। সবচেয়ে লক্ষণভোগ আমের চাষ কম হচ্ছে। ৪ হাজার ৫৫৬ বিঘা জমিতে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫টি গাছে এ আমের চাষ হচ্ছে।