
বগুড়ায় সেই হায়দারকে ইজিবাইক উপহার দিয়েছে জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তার হাতে ইজিবাইকের চাবি তুলে দেন পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। এসময় হায়দার আলীর স্ত্রী তানজিলা আক্তার, শিশু কন্যা হাদিয়া খাতুন ও বড় ভাই আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।
হায়দার আলী বগুড়া শহরের বেলাইলের মৃত জুড়ান আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, ঢাকার ব্রান্ডা গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল মোস্তফার অর্থায়নে জেলা পুলিশ হায়দারকে ইজিবাইকটি উপহার দেয়।
এর আগে গত ১৩ জুলাই বগুড়া শহরের সাতমাথায় প্রবেশ করায় হায়দার আলীর অটোরিকশার সিট খুলে নিয়ে জব্দ করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে শহরের গোহাইল রোডে অটোরিকশা রেখে তিনি ট্রাফিক পুলিশের বক্সে যান সিট ছাড়িয়ে নিতে। অনেক কাকুতি-মিনতি করেও সিট না পেয়ে হায়দার ফিরে এসে দেখেন তার অটোরিকশা নেই। পরে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও অটোরিকশাটি আর পাননি। জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে কান্না থামছিলো না হায়দারের। হায়দারের তিন সদস্যের সংসারের জীবিকার একমাত্র উৎস ছিল ইজিবাইকটি।
এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর হায়দারের অটোরিকশা চুরির ঘটনা নজরে আসে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর। পরে ১৫ জুলাই বগুড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হায়দারকে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে হায়দারের ইজিবাইক উদ্ধারে চেষ্টা ও পরবর্তীতে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, হায়দারের ইজিবাইক হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যম আসার পর তার মানবিক আবেদন জেলা পুলিশের নজরে আসে। ইজিবাইক উনার উপার্জনের একমাত্র উৎস ছিল। সে সময় জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হায়দারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এরপরে হায়দারকে একটি ইজিবাইক উপহার দিতে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হয়। তাতে সাড়া দিয়ে ঢাকার ব্রান্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল মোস্তফা ইজিবাইক ক্রয়ে অর্থায়ন করেন।
হায়দার আলী জানান, আমার খারাপ সময়ে পুলিশ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর জন্য কৃতজ্ঞ। ইজিবাইক চুরির পর থেকে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় এই দুই মাস খেয়ে পড়ে বেঁচেছিলাম।
হায়দারকে উপহার প্রদানের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, শরাফত ইসলাম, সুমন রঞ্জন সরকার ও সদর থানা পুলিশের ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।