Joy Jugantor | online newspaper

সাড়া ফেলেছে শিমুর তৈরি জ্বালানি সাশ্রয়ী ‘জাদুর বাক্স’

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭:৫১, ১৯ আগস্ট ২০২৩

সাড়া ফেলেছে শিমুর তৈরি জ্বালানি সাশ্রয়ী ‘জাদুর বাক্স’

সাড়া ফেলেছে শিমুর তৈরি জ্বালানি সাশ্রয়ী ‘জাদুর বাক্স’

সারা বিশ্বে যখন জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে ঠিক তখনই সাড়া ফেলেছে সিমশন সাহা শিমুর তৈরি জ্বালানি সাশ্রয়ী ডিভাইস। এটি এলাকায় ‘জাদুর বাক্স’ নামে পরিচিত। যে কোনো সেচ পাম্পের সঙ্গে এই ডিভাইসটি (বক্স) জুড়ে দিলে কমপক্ষে ৮০ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব বলে দাবি আবিষ্কারক শিমুর।

তিনি বলেন, সাধারণত ফোর হর্স সাইজের ছোট একটি শ্যালো মেশিন ও ৩ ইঞ্চি পাম্পে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লিটার পানি উত্তোলন করা যায়। সেখানে এই পাওয়ার ডিভাইসটি একই মেশিন ও পাম্পের সঙ্গে জুড়ে দিলে প্রতি সেকেন্ডে ১৮ লিটার পানি উত্তোলন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এবং সরকারের এটুআই পরীক্ষায় যার প্রমাণ মিলেছে, মিলেছে সনদও। তারপরেও এখন পর্যন্ত মেলেনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা। যোগ করেন শিমু।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, শিমুর ডিভাইসটি সরকারি অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন কৃষকদের আর্থিক লোকসান কমবে, অন্যদিকে জ্বালানি সাশ্রয় হবে। এতে কৃষক ও সরকার উভয়ই লাভবান হবে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের নারকেল বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সিমশন সাহা শিমু। এলাকার একটি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করে চলে যান চট্টগ্রামে। সেখানে একটি কারিগরি কলেজে পড়াশোনা করলেও অর্থের অভাবে বেশি দূর এগোতে পারেননি। এরপর তিনি একটি মেশিনারিজ দোকানে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে রপ্ত করেন বিভিন্ন মেশিন মেরামতের কাজ।

১৯৭৯ সালে গোপালগঞ্জ এসে জমি সেচের ব্লক সুপারভাইজার হিসাবে কাজ করেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ও সংকটের কারণে কৃষকেরা তার কাছ থেকে পানি নেয়া বন্ধ করে দেয়।

সেই আক্ষেপ থেকে নিজের ব্যবহৃত বাইসাইকেল প্যাডেল করে উদ্ভাবন করে ফেলেন জ্বালানি ছাড়াই সেচযন্ত্র। কিন্তু সেটি অনেক কষ্টসাধ্য হওয়ায় এ বিষয়ে আরও আগ্রহ বাড়িয়ে দেন। পরে রপ্ত করা কৌশল দিয়ে জ্বালানি সাশ্রয় ডিভাইস (বক্স) তৈরি করেন। পরে তা ১০ বার পরিবর্তন করে বর্তমান ডিভাইসটি (বক্স) তৈরি করেন।

সাধারণ পাম্প দিয়ে এক লিটার জ্বালানি তেল খরচ করে যে পরিমাণ পানি উঠানো যায় সেখানে এ ডিভাইসটি যুক্ত করে পানি উঠালে অন্তত ১৪ গুণ বেশি পানি উঠানো সম্ভব।

ইতিমধ্যে এ ডিভাইস দিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কৃষিতে অবদান রাখায় ২০০৮ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পুরস্কার পান তিনি। পরে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে অর্থ চেয়ে আবেদন করলেও মেলেনি সাড়া। এতে এই প্রযুক্তি যেন মুখ থুবড়ে পড়তে চলছে।

সিমশন সাহা শিমু বলেন, সাধারণ পাম্প দিয়ে সেকেন্ডে পয়েন্ট ২৫ কিউসেক পানি উত্তোলন করা গেলেও এ বক্স সংযুক্ত করে দিলে সেকেন্ডে এক দশমিক শূন্য ছয় কিউসেক পানি উত্তোলন করা যায়। ডিভাইসটি পরীক্ষার জন্য এটুআই ও বুয়েটে পাঠানো হলে এর কার্যকারিতার প্রমাণ মেলে, পাই সনদও।