Joy Jugantor | online newspaper

সেচপাম্পে তালা, ২০০ বিঘায় আবাদ নিয়ে শঙ্কা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫২, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২১:৫৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সেচপাম্পে তালা, ২০০ বিঘায় আবাদ নিয়ে শঙ্কা

জমি নিয়ে বিরোধে সেচপাম্পে দেয়া হয়েছে তালা

দিনাজপুরের হিলিতে সেচপাম্পের জমির মালিকানা নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বে ২শ বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সেচপাম্পের জায়গা নিজের দাবি করে সেটি তালা দিয়ে রেখেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। এতে বোরোর বীজতলা নষ্ট হয়ে কৃষকদের ধান রোপণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।  

উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের বলরামপুর (গোবিন্দপুর) গ্রামের সেচপাম্পটি পরিচালনা করছেন সেখানকার কৃষক সমবায় সমিতি। গত ১৬ ডিসেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য বিনুল ইসলাম সেচপাম্পটি তার জমিতে দাবি করে সেখানে তালা দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ইউপি সদস্য বলছেন, জমি মেপে সেচপাম্পটি তার জায়গাতে পড়েছে।

বলরামপুরের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবার উত্তরাধিকার হিসেবে আমি এই সেচপাম্প পরিচালনার সদস্য। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) কাছ থেকে বলরামপুর কৃষক সমবায় সমিতির মাধ্যমে সেচপাম্পটি ১৯৮২ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমরা পাম্পের মাধ্যমে পানি নিয়ে এলাকার ২০০ বিঘা জমিতে চাষা করে আসছি। এ থেকে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে ড্রেনেজ সংস্কারসহ পাম্পের যন্ত্রাংশ কেনা, বিদ্যুৎ বিল ও লাইনম্যানের বেতন দেওয়া হয়। কৃষকদের সুবিধার জন্য এভাবেই আমরা পাম্প পরিচালনা করে আসছিলাম। কিন্তু গত ১৬ ডিসেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য বিনুল ইসলাম পাম্পটি তার জমিতে দাবি করে সেখানে তালা দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে জমি মাপার কথা বলে তিনি। পরে মেপে দেখা যায় বিনুল ইসলামের দেড়ফিট জায়গার ভেতরে পড়েছে পাম্পটি। বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএডিসি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমাধান হয়নি।’

সেচ সুবিধায় থাকা কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বোরো ধান রোপণের জন্য চারা তৈরি করা হয়ে গেছে। এখন জমিতে চারা রোপণ করার সময়। কিন্তু এই মুহূর্তে পাম্পে তালা মারা। পানির অভাবে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার ধান রোপণের জন্য জমিও প্রস্তুত করতে পারছি না।’

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জায়গার উপর পাম্পটি করা হয়েছে। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। পরে তিনি সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মেপে আমার জায়গার উপর পাম্প থাকার সত্যতা পান। আমার জায়গার উপর পাম্প, তাই তালা লাগিয়েছি। তবে কৃষকরা পাম্পের চাবি নিয়ে আসলে ধানের চারা বাঁচানোর জন্য আমি তালা খুলে দিয়েছি। বিষয়টি এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিচারাধীন। তাই উনিই ফয়সালা করবেন।’

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ‘সেচপাম্প নিয়ে বিরোধপূর্ণ দুপক্ষই আমার কাছে এসেছিল। জমি নিয়ে যে বিরোধ ছিল সার্ভেয়ারের মাধ্যমে সেটি মাপ করে সমাধান করা হয়েছে। বাকি জটিলতা সমাধানের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি নিরসন হলে কৃষকরা নিয়মিত সেচসুবিধা পাবেন। আর যদি না হয় তাহলে এই মৌসুমে কৃষকদের বোরো আবাদ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য দূরবর্তী গভীর নলকূপ থেকে পানি আনার ব্যবস্থা করা হবে।’