
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বন সাঁওতাল দিবসের আয়োজন করে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬৭তম দিবস পালন হয়েছে। বুধবার উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের তল্লাপাড়ায় সেভেন্থ ডে অ্যাডভেন্টিষ্ট প্রি সেমিনারী প্রাইমারী স্কুলে এই দিবস পালন করা হয়।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বন এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও শহীদের স্মৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ।
এ সময় সাঁওতাল নেতা জেমস সরেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সাঁওতালরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
এ স্বীকৃতির দাবি করেন বক্তারা। এ ছাড়া তারা আরও বলেন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে; দখলি শর্তে খাস জমি, বসতভিটা, কবরস্থান, পুকুর আদিবাসীদের নামে প্রদান করতে হবে; প্রাকৃতিক বনে আদিবাসীদের প্রথাগত অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে, বনায়ন ও প্রকল্পের নামে প্রাকৃতিক বন ও বননির্ভর আদিবাসী জীবন বিপন্ন করা যাবে না, আদিবাসীদের নামে মিথ্যা বন মামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বনায়ন ও উন্নয়ন প্রকল্পের নামে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেয়া যাবে না; সকল আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কমপক্ষে একজন করে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে; আদিবাসীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা ও প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণিসহ সকল সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ ৫% কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।
এতে বক্তব্য দেন অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাঁওতাল নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, অবলম্বনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এ.কে.এম মাহবুবুল আলম, স্কুল শিক্ষক দিপালী কিস্কু, ইয়ুথ লিডার মেরিজান মুরমু, অবলম্বনের প্রজেক্ট অফিসার মাজেদুল ইসলাম, সখী পাহাড়ী, কৃষ্ণা রবিদাস প্রমুখ।
১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহে সিধু, কান, চাঁদ, ভৈরব, ফুলমনির নেতৃত্বে শোষনের বিরুদ্ধে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল। এ বিদ্রোহে ১০ হাজারের বেশি সাঁওতাল শহীদ হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধ করতে গিয়ে শত শত বীর সাঁওতাল শহীদ হয়।