Joy Jugantor | online newspaper

দিনাজপুরে ৪৮ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ২৫ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ০৮:৫৬, ২৫ নভেম্বর ২০২১

দিনাজপুরে ৪৮ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

সংগৃহীত ছবি

চলতি রবি মৌসুমে দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় ৪৮ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে আগাম জাতের আলু ইতিমধ্যে ১০ ভাগ লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলু বাজারে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সারাদেশে কৃষি পণ্য উৎপাদনের অন্যতম জেলা হিসেবে দিনাজপুর পরিচিতি রয়েছে। রবি মৌসুমে অন্যতম রবি শস্য আলু চাষের বাম্পার ফলন অর্জিত করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ কর্মীরা ইতিমধ্যে কৃষকদের অন্যান্য ফসল উৎপাদন ও লাগানোর পাশাপাশি আলু চাষে আগ্রহী করতে তাদের অধিক ফলনের আলুর বীজ বপনের পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, চলতি বছর রবি মৌসুমে পহেলা নভেম্বর থেকে জেলার ১৩টি উপজেলায় আগাম জাতের আলু গ্যানোলা ও কারেজ আলু বীজ লাগানোর কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আগাম জাতের আলুর জমিতে আলুর গাছ বড় হতে শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই আগাম জাতের আলু গ্যামেলা ও কারেজ বাজানে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। আগাম আলু বাজারে আসলে কৃষকেরা ভালো মূল্য পাবে সে লক্ষ্য মাথায় রেখে কৃষকেরা আলুর পরিচর্যা শুরু করেছে।

নভেম্বর থেকে আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ভ্যারাইটি আলুর বীজ কৃষকেরা জমিতে লাগাতে থাকবে। আমন ধান কর্তনের পর অতিরিক্ত ফসল হিসেবে ডিসেম্বর মাস ওই জমিতে আলু চাষের জন্য কৃষকেরা জমি প্রস্তুত করে আলুর ভ্যারাইটি, ডায়মন্ড, কার্টিলাল, স্টারিজ, দেশী জাতের চল্লিশা, রোমানা, পেট্রোনিজ আলুর বীজ লাগাতে থাকবে। এরপরেই জানুয়ারি মাসের শুরুতেই হাইব্রিড জাতের আলু লেডিরোসেটা, বারী-২, বারী-৯, এটলাস এবং দেশী জাতীয় স্থানীয় আলু লাল পাকড়ি, সাদা পাকড়ি, বগড়াই, সেলবিলাতী, কাবেরী, জলপাই, সাদাপাটনায় ও লালপাটনায় আলুর বীজ লাগানো শুরু করবে। সবমিলিয়ে একদিকে যেমন আলুর বীজ লাগানো হবে।

আবার অন্যদিকে আলু জমিতে থেকে কৃষকের ঘরে উঠতে থাকবে। আগামী জাতের আলু রবি মৌসুমের শুরুতেই নতুন আলু হিসেবে গ্রাহকরা এ আলু তৃপ্তি সহকারে খেতে পারবে। বাসায় আলুর মজুদ রাখতে এবং পুরাবছর খাওয়ার জন্য যে আলু উৎপাদন হবে তা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ওই আলু জমি থেকে কৃষকেরা উঠাতে পারবে। এসব আলুর মধ্যে দেশী স্থানীয় জাতের লালপাকড়ি, সাদাপাকড়ি, বগড়াই, সেলবিলাতী, কাবেরী, জলপাই, সাদাপাটনাই ও লাল পাটনাই আলু অন্যতম। 

এবারে গড়ে আলুর প্রতি হেক্টরে ফলন নির্ধারণ করা হয়েছে ২১দশমিক ৮১ মেঃটন। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জেলায় ১০ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৪৮ মেঃটন আলু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আলুর ফলন অর্জিত করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের আলুর ক্ষেতে পরিচর্যা, বালাই নাশক, কীটনাশক ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার এবং গবর সার দেয়ার জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা চলমান রেখেছে।

সূত্রটি জানান, এবারে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে জেলায় বাম্পার আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গতবছর জেলায় ৫০ হাজার ২১৭ হেক্টর জমিতে আলু অর্জিত হয়েছে। ফলন হয়েছিল ১০ লক্ষ ৮০ হাজার ২০০ মেঃটন আলু। লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত এবারও অর্জিত করতে কৃষি বিভাগ তৎপর রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

দিনাজপুর বিরল উপজেলার ধামরাই গ্রামের আদর্শ কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি এবারে আগাম জাতের আলু নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে গ্যানোলা ও কারেজ ভ্যারাইটি ৭০ শতক জমিতে চাষ করেছেন। আলুর গাছ পরিচর্যার মাধ্যমে আলু অর্জি হওয়ার উপযোগী করে তোলার পর্যায় কাজ চলছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তার আলু বাজারে বিক্রি করতে এবং নিজেও খেতে পারবেন।

একই বক্তব্য প্রদান করেন সদর উপজেলা আউলিয়াপুর গ্রামের কৃষক হাজী মতিয়ার রহমান, তিনি বলেন, আগাম জাতের আলু ৫০ শতক জমিতে চাষ করেছেন। অর্জিত আলু আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজারে তুলতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।