Joy Jugantor | online newspaper

৩৩৩ নম্বরে খাদ্য সহায়তা চেয়ে হয়রানি হচ্ছেন অসহায়রা

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ০৯:৫৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

৩৩৩ নম্বরে খাদ্য সহায়তা চেয়ে হয়রানি হচ্ছেন অসহায়রা

নওগাঁর বদলগাছীতে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন কলসেন্টার ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে অসহায়রা হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলায় খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে কেউ কেউ খাদ্য না পেয়ে অবশেষে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, খাদ্য সহায়তা চেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে অসহায়রা। পরে ইউএনও অফিস থেকে অসহায়দের ফোন করে উপজেলায় আসতে বলা হয়। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা চত্ত্বরে সকালে ত্রাণ নিতে এসে প্রায় অর্ধশত পুরুষ ও মহিলা। কিন্তু বেলা ৪ টা পর্যন্ত তাদের কোন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়নি। পরে বিকেল ৫ টার দিকে ত্রাণ নিতে আসা মাত্র ২৮ জন ব্যক্তিকে ত্রাণ দেয়া হয়। আর বাকিরা ত্রাণ না পেয়ে ফিরে গেছেন।

আরো জানা যায়, ৩৩৩ নম্বরে যারা ত্রাণের জন্য আবেদন করে সেই তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে আবেদনকারীদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরসহ একটি তালিকা প্রেরণ করেন জাতীয় তথ্য বাতায়ন সেন্টার। সেই তালিকাটি যাচাই-বাচাই পূর্বক ত্রাণ সরবরাহ করার কথা। কিন্তু তালিকা আসার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোন যাচাই-বাচাই করে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

দেউলিয়া গ্রামের আলিফ উদ্দীনের স্ত্রী বৃদ্ধা আজেদা (৫৯) বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা থেকে ফোন করে বেলা ১১ টার মধ্যে ত্রাণ নিতে উপজেলায় আসতে বলা হয়। ফোন পাওয়ার পর সময়মত উপজেলায় আসি। কিন্তু সারাদিন বসে রাখার পর আমাকে বলে ত্রাণ ফুরিয়ে গেছে এবং কয়েকদিন পর আসতে বলা হয়। দুই-তিনবার ঘুরতে হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর আবারো আমাকে আসতে বলা হয়। সকাল ১০ থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত উপজেলা চত্বরে অপেক্ষা করা হলেও ত্রাণ না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছি। কখনো আর ত্রাণ নিতে আসবোনা। তাদের আচরণ খুব খারাপ।

ত্রাণ নিতে আসা ফাজেদ, শাপলা, আসলাম, আঞ্জুআরাসহ আরো অনেকে বলেন, ইউএনও অফিস থেকে ফোন দিয়ে আমাদের বেলা ১২ টার মধ্যে আসতে বলা হয়। আমরা সময় মতো আসলেও বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আমাদেরকে বসিয়ে রাখা হয়। অফিসের লোকদের কাছে আমরা ত্রাণ কখন পাবো জানতে চাইলে তারা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। আমরা গরীব মানুষ কাজকর্ম করে খাই। ডেকে নিয়ে এসে এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদেরকে বসে রেখে হয়রানী করা হচ্ছে। 

ডাঙ্গীসারা গ্রামের লাকী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত বুধবার দুপুরে ইউএনও অফিস থেকে ফোন করে বৃহস্পতিবার ত্রাণ নিতে উপজেলায় আসতে বলা হয়। ফোন পেয়ে বৃস্পতিবার দুপুরে ত্রাণ নিতে আসি। কিন্তু আমাকে ত্রাণ না দিয়ে ধমক দিয়ে বলেন পরে আবার জানানো হবে।’ 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চায় ফিরতি তালিকা আসার পর যাচাই-বাচাই পূর্বক তাদের ত্রাণ দিতে হবে। কারণ যারা ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান তারা যে সবাই ত্রাণ পাবে এমন কথা নয়। কারণ অনেকেই বাড়িতে চাল রেখে খাদ্য নেওয়ার জন্য ফোন দেয়। যাদের বাড়িতে ২০ কেজি চাল থাকবে তারা এই খদ্য সহায়তা পাবেনা। আমি অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকার করণে এ বিষয়টি দেখেন ইউএনও। তিনিই বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বলেন, যারা ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চায়, পরে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয়। দেখা গেছে অনেকে একাধিকবার খাদ্য সহায়তা নিয়েছে। 

তিনি বলেন, গত দিন যেটা হয়েছিল যারা খাদ্য সহায়তা নেওয়ার জন্য উপজেলায় আসছিল তাদের ফোন করা না হলেও অন্য মাধ্যমে খবর পেয়ে চলে আসছে। কিন্তু তাদেরকে উপজেলা থেকে ফোন করে ডাকা হয়নি। এছাড়া অনেকে অন্য কাজেও আসছিল বলে জানান তিনি।