Joy Jugantor | online newspaper

বগুড়ায় সজনে ডাঁটায় স্বচ্ছলতা

তরিকুল ইসলাম জেন্টু

প্রকাশিত: ১৪:১২, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১৪:২৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বগুড়ায় সজনে ডাঁটায় স্বচ্ছলতা

সান্তাহার পৌর শহর ও আশেপাশের গ্রাম-গঞ্জে গাছে গাছে প্রচুর সজনে ডাঁটার ফুল এসেছে। 

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সজনে গাছের ডালে ডালে ফুটেছে ফুল। আভাস দিচ্ছে বাম্পার ফলনের। মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও বাগানে বাগানে ঘুরে আগাম সজনে ডাঁটা কিনে রাখছেন। তবে ভয় রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের। এছাড়া সবকিছু ঠিক থাকলে গত কয়েক বছরের চাইতে এবার বেশি সজনে উৎপাদন হবে। এমন আশা চাষীদের। সবমিলিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও চাষীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে সজনে ডাঁটার ফুল।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহর ও আশেপাশের গ্রাম-গঞ্জে গাছে গাছে প্রচুর সজনে ডাঁটার ফুল এসেছে। 

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন বাজারে সজনে ডাঁটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সজনের ডাঁটা সান্তাহার থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় রপ্তানি করা হয়। বাজারে অন্যান্য সবজির চাইতে সজনের দাম বেশি। তবে এবার গাছে গাছে যেভাবে ফুল এসেছে, তাতে কমতে পারে দাম।

সজনে চাষী ফজলুল হক ও সবুজ হোসেনসহ অনেকে জানিয়েছেন, বাণিজ্যিকভাবে সজনের চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। এছাড়াও উপজেলায় অনেকে সজনের চাষ করে বেকারত্ব দূর করেছেন।

বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদা সুলতানা বলেন, সজনের ডাঁটায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। তবে ভিটামিন ‘বি’ এর পরিমাণ বেশি। এটি এন্ট্রি অক্সিজেন হিসেবে কাজ করে। তাই উচ্চরক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ব্লাড সুগার কমায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে এটি অনেক উপকারী। সজনের ডাঁটায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম আছে। এতে হাঁড় মজবুদ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সজনে আঁশযুক্ত খাবার হওয়ায় কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে। আর মুখের রুচিও বৃদ্ধি করে এই সজনে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সজনের ডাঁটা প্রধানত দুই প্রজাতির হয়। এরমধ্যে এক প্রজাতি বছরে তিন থেকে চারবার চাষ হয়। স্থানীয়ভাবে এর নাম রাইখঞ্জন। পতিত জমি, পুকুর পাড়, রাস্তা বা বাধের ধারে আঙ্গিনায় এমনকি শহরের যেকোনো ফাঁকা জায়গায় সাজনের চাষ হয়।

সজনে চাষের জন্যে এর কোনো বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে রাখলেই সাজনে গাছ জন্ম নেয়। এ গাছের পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। বড় বা মাঝারি ধরণের একটি গাছ থেকে ৬ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। বিশেষ করে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের মাটি, পানি ও আবহাওয়া সজনে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় সান্তাহার পৌর শহর ও এর আশেপাশের এলাকার এসব গাছ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার টন সজনে উৎপাদন হয়। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, আদমদীঘি উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া সজনে চাষের জন্যে উপযোগি। বাণিজ্যিকভাবে সজনের চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।