
কাঁঠাল গাছ।
২০০ কাঁঠালের ফলন এক গাছে। গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত শুধু কাঁঠাল। যেন পাতায় পাতায় শোভা পাচ্ছে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ জাতীয় এই ফল! শুধু ফলনই বেশি নয়, এই গাছের কাঁঠাল মিষ্টি রসালো ও স্বাদে অতুলনীয়। কাঁঠালের প্রতিটি কুশ যেন মধু দিয়ে মাখা। একবার কেউ খেলে, বারবারই এই কাঁঠালের স্বাদ পেতে চাইবেন।
তবে এবারই নাকি গাছটিতে কাঁঠালের সবচাইতে কম ফলন হয়েছে! প্রতিবার ৩০০ কাঁঠালের ফলন হয় গাছটিতে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গাছের ধারণ ক্ষমতার ওপর ফলন নির্ভর করে। তবে কাঁঠাল গাছে যখন ফলন বেশি হবে, তখন ফলের আকার ছোট হয়ে আসবে।
কাঁঠালের পুষ্টিগুণের বিষয়ে চিকিৎসকেরা বলছেন, কাঁঠাল পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনের একটি ভালো উৎস। পটাশিয়াম হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকা কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
অসংখ্য কাঁঠালের ফলন হওয়া ওই গাছটি বগুড়ার বনানী বন্দর এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চত্বরে রোপণ করা হয় প্রায় ৩০ বছর আগে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএডিসি কার্যালয় চত্বরে এই কাঁঠাল গাছটি দেখা যায়। সেখানে কথা হয় ওই কার্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী ও নৈশ প্রহরীর দায়িত্বে থাকা আল আমিনের সঙ্গে। তিনি ১২ বছর ধরে সেখানে কর্মরত আছেন। বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
তিনি জানান, গাছটিতে প্রতি বছর ৩০০টি কাঁঠাল হয়। শুধু এবারই প্রায় ২০০ কাঁঠাল হয়েছে। যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় সর্বনিম্ন। এই গাছের কাঁঠাল খেতে খুব সুস্বাদু। যারা একবার গাছটির কাঁঠাল খেয়েছেন, তারা সহজে স্বাদ ভুলতে পারবেন না। গাছে ফলন হওয়া কাঁঠালের মধ্যে কয়েক দফায় ১০০টিরও বেশি কাঁঠাল কেটে নেয়া হয়েছে।
ওই গাছে কাঁঠালের ফলন সম্পর্কে শুধু আল আমিনই এমন কথা বলছেন না। তার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলছেন বিএডিসি কার্যালয়ে আশেপাশের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।
বনানী বন্দর এলাকার চাল ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক জানান, ওই গাছে অসংখ্য কাঁঠাল হয়। খেতেও খুব সুস্বাদু। তবে বেশি বড় হয় না। কাঁঠালগুলো ছোট আকারের হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহীম হোসেন খোকন জানান, গাছটির কাঁঠাল তিনি খেয়েছেন। গাছের কাঁঠাল রসালো মিষ্টি ও সুস্বাদু। দীর্ঘ বছর ধরেই তিনি ওই গাছের ফলন দেখে আসছেন। এবারই কম ফলন হয়েছে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাহিদা সুলতানা জানান, কাঁঠালে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি, ভিটামিন ই- ক্যালসিয়াম ফলিক এসিড রয়েছে। ফলটি পটাশিয়াম ম্যাগনোশিয়াম এবং আয়রনের একটি ভালো উৎস। পটাশিয়াম হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকা কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ আঁশ রয়েছে। যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে।
বনানী বন্দর এলাকার বাসিন্দা আল আমিন। তিনি বগুড়ার কাহালু উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি জানান, গাছের ধারণ ক্ষমতার ওপর ফলন হয়। কোনো গাছে খুব বেশি কাঁঠালের ফলন হলে সেগুলো আকারে ছোট হবে। খেতেও হবে সুস্বাদু। এগুলো দেশীয় জাতের কাঁঠাল। সাধারত দেশে দু’ধরণের কাঁঠালের জাত রয়েছে। দুই জাতের একটি হলো খাজা ও অন্যটি নরম জাতের কাঁঠাল। খাজা হলো শক্ত জাতের কাঁঠাল। অনেকেই শক্ত কাঁঠাল খেতে পছন্দ করেন।