Joy Jugantor | online newspaper

নওগাঁয় শিমের কেজি ১১০ টাকা

আব্বাস আলী

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ২৭ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ১১:৪৯, ২৭ অক্টোবর ২০২১

নওগাঁয় শিমের কেজি ১১০ টাকা

নওগাঁয় শিমের আবাদ।

প্রকৃতিতে বইছে শীতের আমেজ। শীতের উষ্ণতা পাশাপাশি নওগাঁর হাটবাজারে শীতের শাকসবজি উঠতে শুরু করেছে। নতুন শাকসবজি হওয়ায় দামটাও একটু চড়া। ভাল দাম পেয়ে খুশি চাষীরা। গত বছর করোনাকালীন সময় শাকসবজিতে তেমন দাম না পাওয়ায় এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ করেছেন চাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি শীত মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে শাকসবজির আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ৫৪০ হেক্টর, রানীনগরে ৮০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৮০ হেক্টর, বদলগাছীতে ৮০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৬০ হেক্টর, পত্নীতলায় ২৪৫ হেক্টর, ধামইরহাটে ৪৭৫ হেক্টর, সাপাহারে ২০ হেক্টর, পোরশায় ৮০ হেক্টর, মান্দায় ৫২০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ২০০ হেক্টর। এরমধ্যে শিম ৫২০ হেক্টর, মুলা ১৩০ হেক্টর, বেগুন ২৮০ হেক্টর, ফুল কপি ৮৫ হেক্টর, বাঁধা কপি ৩০ হেক্টর, পালংশাক ১০৫ হেক্টর এবং লালশাক ৭৫ হেক্টর শীতকালীন শাকসবজি।

শিম প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা, ফুল কপি প্রতি পিস ৩০-৪০ টাকা, কচুর লতি ৪৫-৫০ টাকা কেজি, মুলা ১৫-২০ টাকা কেজিহ, লালশাক ১৫-২০ টাকা কেজি, পালংশাক ৪০-৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৩৫-৪০ টাকা কেজি, ধোনা পাতা ৭০-৮০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলার বর্ষাইল, র্কীত্তিপুর ও বক্তারপুর ইউনিয়নে সবুজে ছেয়ে আছে শাকসবজি। সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে শিম, ফুল কপি, বাঁধা কপি, লাউ, বেগুন, মুলা, করলা, বরবটি, পালং ও লালশাক সহ বিভিন্ন শাকসবজি। পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। বিভিন্ন বাজারে শীতের শাকসবজি উঠতে শুরু করেছে। পাইকারী বাজারসহ গ্রামের হাট-বাজারে শীতের শাকসবজির ব্যাপক সমাহার পরিলক্ষিত হচ্ছে।

সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নে চানপুর গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, আগাম জাতের সবজি হিসেবে আট কাঠা জমিতে শিম লাগিয়েছি। এরআগে ওই মাচায় করলা ছিল। তাই শিমের মাচা তৈরী করতে কোন খরচ হয়নি। এই পরিমাণ জমি থেকে সপ্তাহে ৫-৬ কেজি শিম উঠছে। কিছুদিন পর আরো বেশি পরিমান শিম উঠা শুরু হবে। এখন বাজারে শিম কম থাকায় দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। করোনাকালিন সময় শাকসবজির দাম কম ছিল। তখন আমাদের মতো অনেক কৃষকই দাম পাইনি। এবার লোকসান পুশিয়ে নিতে বেশি করে শাকসব্জির আবাদ করা হয়েছে। এমন দাম থাকলে মোটামুটি লাভবান হওয়া যাবে।

সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নে গোবিন্দপুর গ্রামের শিমচাষী ময়নুল হক বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন। প্রায় একমাস থেকে শিম উঠা শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ওই জমি থেকে ২০ কেজির মতো শিম উঠছে। প্রতি কেজি শিম পাইকারি দরে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বর্তমানে আবহাওয়া খারাপ থাকায় শিমে ঠিকমতো ফুল আসছে না। রোদ, গরম ও শীত এই অবস্থা চলছে। ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলে শিমের জন্য ভাল হয়। বাজারে এখন শিমের পরিমাণ কম এজন্য দামটাও বাড়তির দিকে। শীতকালিন সবজি হিসেবে শিমের পাশাপাশি টমেটো, গাজর, ধোনা পাতা লাগিয়েছে। বাজারে আসতে কিছুদিন দেরী হবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামশুল ওয়াদুদ বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের শাকসবজির ভাল উৎপাদন হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষীরা বেশি পরিমাণে শাকসবজির চাষ করেছে। আগাম জাতের শাকসবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ভাল দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছে চাষীরা।

তিনি বলেন, এ বছর বন্যা ও দুর্যোগ না হওয়ায় কৃষকরা বীজ বপন থেকে শুরু করে চারা পরিচর্যা সুষ্ঠু ভাবে করতে পারছে। তেমন কোন রোগবালাই নেই। এখন অল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে ভরা মৌসুমে কৃষকরা ভালো দাম পাবে বলে আশা করছি।