Joy Jugantor | online newspaper

সবজি চাষে লাভের স্বপ্ন ভেসে যাচ্ছে বৃষ্টিতে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৫ জুলাই ২০২১

আপডেট: ০৬:১৯, ৫ জুলাই ২০২১

সবজি চাষে লাভের স্বপ্ন ভেসে যাচ্ছে বৃষ্টিতে

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া পটলের ক্ষেত।

কুড়িগ্রামে চার-পাঁচ দিনের টানা বৃষ্টিতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সবজিচাষিরা। এবার অকালবন্যা না হওয়ায় চাষিরা ৮০ শতাংশ ফসল তুলতে পারলেও জুনের শেষে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে সবজির ক্ষেত। এতে কৃষকদের লাভের স্বপ্ন বড় ধাক্কা খেয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় নিচু এলাকার চাষিদেরও আগাম পাট কাটতে হচ্ছে। এতে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাবেন না তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যায় ক্ষতির কথা ভেবে জেলায় প্রায় ৮০০ হেক্টর পাট আগাম কাটা হয়েছে। এতে সামান্য কিছু ক্ষতি হবে তাদের।

সদর উপজেলার ধরলা নদীর তীরবর্তী পৌরসভা, হালোখানা, ভোগডাঙ্গা ও পাছগাছী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলের সবজিক্ষেতগুলোতে পানি জমেছে। রোববার দুপুরে পাছগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার সবজিচাষিরা পানিতে ডুবে থাকা ক্ষেত থেকে সবজি তুলছিলেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা কাশেম, খলিল ও নুরুজ্জামান জানান, গতবার জুনের প্রথম সপ্তাহে বন্যার পানি ঢুকে সব ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার বন্যা না হলেও অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নিচু ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। এতে শেষের দিকের ফসল নষ্ট হওয়ার পথে।

শুলকুর বাজার এলাকায় ৩০ শতক জমির পটোল ক্ষেত তলিয়ে গেছে জব্বার আলীর। দুজন দিনমজুর নিয়ে সেই ক্ষেতের পটোল তুলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গতবার খুব লস হয়ে গেছে। এবার লাভের মুখ দেখার সময় বৃষ্টির পানি সব শেষ করি দিল। আর দুবার পটোল তুলতে পারলি ভালো লাভ হতো। সেটা আর হলো না।’

দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামের চাষি খলিল জানান, প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ২৫ শতক জমিতে চিচিঙ্গা আর চালকুমড়া লাগিয়েছিলেন। খরচ উঠে গেছে। তবে বৃষ্টি আর কিছুদিন পরে হলে তার খুব উপকার হতো।

একই গ্রামের কৃষক নাজমুল জানান, যারা উঁচু জমিতে সবজি চাষ করেছেন, তারা এবার খুব লাভবান হয়েছেন। রোববার পানি কিছুটা কমেছে, এতে তারা আশান্বিত।

ছড়ারপাড় গ্রামের কিষানি ছালেহা বেগম বলেন, ‘নিচু এলাকা হওয়ায় পাটক্ষেতগুলো তলিয়ে যাচ্ছিল। এখনও পুরাট (পরিপক্ব) হয়নি। কিছুটা নমল অবস্থায় বাধ্য হয়ে পাট কাটতে হলো। এতে মণে ৫-৭ কেজি কম পাট পাব।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সদর উপজেলায় প্রায় ৭০ হেক্টর সবজিক্ষেতে পানি জমেছে। এতে পটোল, শসা, মিষ্টিকুমড়া ও মরিচের ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা ৮০ ভাগ ফসল তুলতে পেরেছেন। এতে লাভের পরিমাণ খুব একটা খারাপ হবে না।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৭ সেন্টিমিটার বাড়লেও বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কিছুটা হ্রাস পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৮৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।