সারিয়াকান্দি চরবাটিয়াচরে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। ছবিটি রোববার দুপুরে তোলা।
সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবছর। চাষীরা ১ হাজার ৪০ টন চাল ঘরে তুলবেন এবার এ ফসল থেকে। আশা করা হচ্ছে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যেই এ ধানকাটা-মাড়াইয়ের কাজ শেষ করবেন চরের চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার বিস্তৃীর্ণ এলাকা জড়ে যমুনা ও বাঙ্গালী নদী রয়েছে। নদী দুটির দু’কূলজুড়ে বিশাল এলাকা অনাবাদী পড়ে থাকে। উপজেলায় এসব স্থানে প্রতি বছর অনেক কৃষক স্থানীয় জাতের বোরো ধানের আবাদ করেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে কালো জাতের বোরো এবং ৪৫০ হেক্টর জমিতে সাদা জাতের বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, তারা যে যার মতো কোনো রকমের হাল চাষ না করেই অগ্রায়ন ও পৌষমাসের দিকে স্থানীয় জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করে থাকে। তবে এ ধানের দুই জাত রয়েছে। জাত দুটি হলো সাদা ও কালো বোরো ধান। নরম ও উর্বর পলি মাটিতে এ ধানের চারা রোপন করার পর কোন ধরনের সার ছাড়াই তরতর করে বেড়ে উঠতে থাকে ধানগাছ। এ ধানের চালের ভাত খেতে সাধারণত স্বাদ কম লাগলেও পান্তাভাত খেতে খুবই ভালো লাগে। যার কারনে এ এলাকার চাষীরা এ ধানের চাষ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এছাড়াও চৈত্র মাসে গো-খাদ্যের সংকট উত্তোরনে এ ধানের খড়ের ভূমিকা অপরিসীম বলে চাষীরা জানান। এরই মধ্যে এ ধানকাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন চরের চাষীরা। ৫০ ভাগ ধানকাটা-মাড়াইয়ের কাজ শেষ করা হয়েছে এরই মধ্যে। ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি বিঘায় ৭ থেকে ৮ মণ করে।
সদর ইউনিয়নের চর বাটিয়াচরের চাষী আলমগীর হোসেন মানিক বলেন, আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। এ পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি জমির ধানকাটা হয়েছে নদীতে। ঢলের পানি দেরিতে আসায় ধান কাটতে কোনই সমস্যা হচ্ছে না। বিল এলাকায় ইরি-বোরো ধানের ফলনে আবহাওয়া জনিত কারনে ফলনে মারাত্নক বিপর্যয় হলেও বিগত ৫/৬ বছরের মধ্যে এবার কালো বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের কিছু অংশে এ জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকলেও দেশের অন্য কোন স্থানে এর আবাদ হয় না। চরের চাষীরা অত্যান্ত পরিশ্রমী হওয়ায় কোন রকমের জমি ফেলে রাখতে চান না বলেই এ ফসলের আবাদ করে থাকেন। চাষীদের কাছে এটা পরে পাওয়া ফসল হিসেবে পরিচিত। অনুকূল আবহাওয়ার কারনে এধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।