Joy Jugantor | online newspaper

নির্ধারিত চার্জ না পাওয়ায় জমিতে দেয়া হচ্ছে না পানি

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ০৪:১২, ২৮ মার্চ ২০২১

নির্ধারিত চার্জ না পাওয়ায় জমিতে দেয়া হচ্ছে না পানি

জমি পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।

নওগাঁয় গভীর নলকুপ (সেচপাম্প) মালিকদের চাহিদামতো সেচ চার্জ না দেয়ায় কৃষকদের ইরি-বোরো আবাদের জমিতে পানি দেয়া হচ্ছে না। গত ১০ দিন থেকে জমিতে পানি না দেয়ায় মাটি শুকিয়ে ফেটে গেছে।

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের চকতাতারু গ্রামের মাঠের এমন অবস্থা। প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় কৃষকরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর (৯ ফেব্রুয়ারি) সেচপাম্প মালিকদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের চকতাতারু গ্রামের মাঠে ছয়জন অংশদারী ব্যক্তিমালিকানাধী একটি গভীর নলকূপ (সেচপাম্প) আছে। যেখানে প্রায় ৭০ কৃষকের ১৫০ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। গত কয়েক বছর থেকে সেচপাম্প মালিকরা নিজেদের চাহিদামতো কোনো নিয়মকানুন ছাড়াই কৃষকদের কাছ থেকে সেচ চার্জ নিয়ে আসছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে এ সেচ চার্জ দিয়ে আসছেন।

চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে ইরি-বোরো মৌসুমে বিএমডিএ (বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং ব্যক্তিগত বিদ্যুৎ চালিত গভীর ও অগভীর নলকূপের জন্য হাঁপানিয়া ইউনিয়নে বিঘাপ্রতি এক হাজার ৪০০ টাকা সেচ চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ওই সেচপাম্পের মালিকরা নির্ধারিত সেচ চার্জ না মেনে কৃষকদের নিকট থেকে তিন মণ ধান ও নগদ ২০০ টাকা দাবি করেন।

কৃষকরা তাদের দাবি মেনে না নেয়ায় ১০ দিন থেকে অধিকাংশ জমিতে পানি দেয়া হয়নি। জমিতে পানি না দেয়ায় মাটি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জমিতে রোপণ করা কচি চারাগুলো হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। চারাগুলো মরে গেলে কৃষকদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

ফসল রক্ষার্থে কয়েকজন কৃষক, মালিকদের দাবি মেনে নেয়ায় তাদের জমিতে পানি দেয়া হয়েছে।

কৃষক আরমান হোসেন, আফজাল, শামসুল ও গোলাম মোস্তফা বলেন, এই বছর এ ইউনিয়নে বিঘাপ্রতি এক হাজার ৪০০ টাকা সেচ চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেচপাম্পের মালিক আমাদের কাছ থেকে নগদ ২০০ টাকা ও বিঘাপ্রতি তিন মণ ধান দাবি করছেন। বর্তমান বাজার হিসেবে তিন মন ধানের দাম প্রায় তিন হাজার ৩০০ টাকা। সে হিসেবে প্রতিবিঘা জমিতে সেচ দিতে আমাদের গুনতে হবে তিন হাজার ৫০০ টাকা। যা আমাদের মতো কৃষকদের পক্ষে দেয়া অসম্ভব। আমরা সেচ কাজে সরকার নির্ধারিত টাকা দিতে চাই।

কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, এমনিতেই দেরিতে সেচপাম্প চালু করায় জমি রোপণ করতে দেরি হয়েছে। তারমধ্যে পাম্পের মালিকরা তাদের চাহিদামতো টাকা দাবি করছে। এই সময় জমিতে চারা লেগে শিড়ক দেয়ার সময়। কিন্তু এখন চারাগুলো শুকিয়ে হলুদ ভাব দেখা দিয়েছে। মালিকরা জমিতে পানি দিবে না বলে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

সেচপাম্পের মালিকদের একজন গোলাম মোস্তফা ডব্লিউ বলেন, বোরো ধান লাগানোর পর থেকে কয়েকজন কৃষক বিভিন্নভাবে আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করছেন। এটা আমাদের ব্যক্তিগত পাম্প। সরকারের বেঁধে দেয়া সেচ চার্জ নেয়া হলে আমাদের লোকসান হবে। তাই নগদ ২০০ টাকা এবং ধান কাটার পর বিঘাপ্রতি তিন মণ ধান নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কোন কৃষককে হুমকি দেয়া হয়নি।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে।